সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে শতশত নির্যাতিত নারী গৃহকর্মী দেশে ফেরতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শুধু জুন মাসের শেষ সপ্তাহেই নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছেন ১২০ নির্যাতিত নারী।
Advertisement
এর আগের মাসে ফিরেছেন আরও ২৬০ জন। এমন সংকটজনক পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করে এ ধরনের অন্যায় বন্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিত নির্যাতন ও প্রতারণার শিকার শতশত নারী গৃহকর্মীর দেশে ফিরে আসা একদিকে যেমন অভিবাসন খাতে সুশাসনের ঘাটতির দৃষ্টান্ত অন্যদিকে এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের নিস্ক্রিয়তা হতাশাজনক ও মানহানিকরভাবে নারী অধিকারের প্রতি সংবেদনশীলতার ঘাটতির পরিচায়ক।
নিজেদের একটু স্বচ্ছলতার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের আশায় পরিবার-পরিজন রেখে এই হতভাগ্য নারীরা বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন। তাদের অধিকার, নিরাপত্তা ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের এবং এ ব্যাপারে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন এমনটাই প্রত্যাশিত।
Advertisement
অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এর কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা ফেরত আসা এসব নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে গন্তব্য দেশে নারী শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা, নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজনে আইনি সংস্কারের তাগিদ দেয়া, নির্যাতিতদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাপ্য মজুরি নিশ্চিত করা।'
ড. জামান বলেন, ‘সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ পুরনো ও সর্বজনবিদিত এবং এ প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশ সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে নারী শ্রমিক পাঠানো স্থগিত রেখেছে।
এমতাবস্থায় আমাদের সরকারকেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে গন্তব্য দেশ থেকে প্রতিকারমূলক সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত নতুন করে নারী শ্রমিক পাঠানো স্থগিত করা যেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত লক্ষাধিক নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর সংবেদনশীল সক্ষমতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
Advertisement
পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ছাড়া যেসব দেশ আমাদের নারীকর্মীদের বিশেষ করে গৃহকর্মীদের জন্য অধিকতর নিরাপদ এবং মানবিক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম সেসব দেশে পাঠানোর চিন্তা করা যেতে পারে।’
এমআরএম/পিআর