জাতীয়

‘বেকারত্বের কারণে আজ ঘরে ঘরে মাদক’

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেছেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ কোটি কর্মক্ষম। তার মধ্যে ৫ কোটির চাকরি আছে। তাই কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়িয়ে বেকারত্ব ঘুচাতে হবে। বেকারত্ব বাড়ার কারণে আজ ঘরে ঘরে মাদক পৌঁছে গেছে। শিল্প-প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব। কারণ চীনে শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কারণে সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাদের উদ্ভাবিত পণ্য আজ সারা বিশ্বে বাজারজাত হচ্ছে।

Advertisement

বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ একথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রতিবছর ২০-২৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব। তাহলে সন্ত্রাস ও মাদক বন্ধ হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করতে পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে চাইলে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এর জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। দেশে অনেক শিল্পপতি রয়েছেন যারা এদেশেই বিনিয়োগ করতে চান। এ জন্য তারা জমি, ব্যাংক ঋণ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, অনুকূল পরিবেশ চান। কিন্তু এসব পূরণের জন্য তাদের বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় অনেকে হয়রানির শিকার হয়ে বিদেশে বিনিয়োগ করেন। রওশন এরশাদ বলেন, এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী অথবা পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এই কমিটি বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে চীনকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাবে। অর্থ পাচার হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। বেকারত্ব বাড়বে। আর বেকারত্ব বাড়লে সমাজে মাদক মহামারী আকারে রূপ নেবে।

বিরোধীদলীয় নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশি দূতাবাস তাদের সক্ষমতা দেখিয়ে বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র তৈরি করেছেন, তা আমার জানা নেই। যদি তারা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে সক্ষম হতেন তাহলে রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশে উন্নতি ঘটতো। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটতো।

রওশন এরশাদ বলেন, স্বীকার করতে হবে এই দেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অপার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে। সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতির পথে দেশকে এগিয়ে নিতে এক টানা ১০টি বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী দূরন্ত সাহস দেখিয়েছেন। এটা ইতিবাচক।

পদ্মা সেতু নির্মাণে দুদিন পর পর ব্যয় বৃদ্ধির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এভাবে কিছু দিন পর পর ব্যয় বরাদ্দ বাড়ালে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন এবং সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি হয়। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে পদ্মা রেল ব্রিজ ও পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় সমন্বয় করা হলে সমস্যা কোথায় তা আমি বুঝি না। আগামীতে এ সব বিষয়ে মনোযোগ দেয়া উচিত সরকারের তাহলে এসব বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে মানুষের মনে যে সংশয় দেখা দেয় তা আর থাকবে না।

Advertisement

বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেন, ৩০ লাখ লোক আয়কর লিপিবদ্ধ থাকলেও কর দেন মাত্র ১৩-১৪ লাখ লোক। দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১ কোটি লোক আয় কর দিতে সক্ষম। কর আদায়ের আওতা বাড়ালে বিদেশি অর্থ সহায়তা না নিয়েই বাজেট প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।

এইচএস/এমইউএইচ/জেএইচ/এমএস