যানজটের নগরীতে ফাঁকা রাস্তায় চলার আনন্দ যেন ঈদে ঢাকাবাসীর বাড়তি পাওনা। কিন্তু এরমধ্যে গণপরিবহনের ভাড়ায় বখশিশের যোগ যেন ঝামেলায় ফেলেছে নগরবাসীকে।
Advertisement
শুক্রবার থেকেই পরিবহনে বখশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে।
শনিবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে।
বাস, সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। এ বিষয়ে কারও কারও আপত্তি না থাকলেও, কেউ কেউ বাসে কন্ডাক্টরের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন।
Advertisement
রায়েরবাগ থেকে গুলিস্তান চলাচলকারী শ্রাবণ পরিবহন শুক্রবার থেকে ভাড়া ২০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। আগে এই ভাড়া ছিল ১৫ টাকা।
শ্রবণ পরিবহনের যাত্রী শাহ আলম গুলিস্তানে নেমে বলেন, ‘জোর করে টাকা নিলে সেটা বখশিশ হয় কী করে। ১৫ টাকার ভাড়ায় ৫ টাকা বেশি নেয়া জুলুম।’
গুলিস্তান থেকে ডেমরা যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রী শাহীন হোসেন। তিনি বলেন, ‘বছরে এরা (পরিবহন শ্রমিকরা) তো এ সময়েই একটু বেশি নেয়। দু’চার টাকা ভাড়া বেশি দিলে আমাদের আর এমন কি ক্ষতি হবে।’
শ্রাবণ পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-জ-১৪-২৬৮৯) চালক মো. ফেরদৌস বলেন, ‘যাত্রী একেবারে কমে গেছে। রাস্তা তো ফাঁকাই। আগে যে গাড়ি ৫ মিনিটে যাত্রী ভরে যেত, এখন গাড়ি পুরা হইতে ২০-২৫ মিনিট লাগে। ঈদের সোমায় আপানরা না দিলে আমরা পামু কই। তাও অনেকে বেশি ভাড়া দেয় না, চিল্লাচিল্লি করে।’
Advertisement
গুলিস্তান থেকে মিরপুরের ভাড়া ২৫ টাকা হলেও মঙ্গলবার থেকে তা হয়ে গেছে ৩০ টাকা। যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুর চালাচলকারী শিকড় পরিবহনের (গাড়ির নম্বর জ-১১-১৪৮৫) হেলপার সোহেল বলেন, ‘আমরা জোর করি না। যে যা খুশি হয়ে ভাড়া বেশি দেয় তাই নেই।’
মোহাম্মদপুর-চিটাগাং রোড রুটে চলাচলকারী মেশকাত ট্রান্সপোর্টে শনির আখড়া থেকে মোহাম্মদপুরে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। অন্যান্য সময় এই ভাড়া ৪০ টাকা।
মেশকাত ট্রান্সপোর্টের (ঢাকা মেট্রো ব-১১৯৫২৮) কন্ডাক্টর আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঈদে বউ বাচ্চা রাইখা রাস্তায় গাড়ি চালাই- আমাগো দুইডা টাকা বেশি দেবেন না? দুই-তিন দিনই তো নিমু মামা।’
গুলিস্তান থেকে বাসাবো চলাচলকারী ‘নাভানা (ম্যাক্সি)’ গাড়ির চালকের সহকারী কিশোর রবিউল জানান, গুলিস্তান থেকে বাসাবোর ভাড়া ১৬ টাকা হলেও মঙ্গলবার থেকে তারা ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
মতিঝিল শাপলা চত্বরের কাছে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘ভাড়া এখন ২০-২৫ টাকা বেশি নেই। অনেকে খুশি হইয়া আরও বেশিও দেয়। একদিনই তো মামা।’
সায়েদাবাদ-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী বলাকা পরিবহনগুলো মতিঝিল থেকে সায়েদাবাদ ভাড়া ৫ টাকার বদলে শনিবার ১০ টাকা করে নিচ্ছে।
সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে সিএনজি অটোরিকশার চালক খালেক মিয়া বলেন, ‘বাস ওয়ালারা ডাবল ভাড়া নেয়। আমরা বেশি নেই না। খুশি হয়ে যে যা বখশিশ দেয় তাই নিই।’
আরএমএম/জেএইচ/পিআর