দেশজুড়ে

জবিতে ভর্তি হয়েও থেমে আছে শারমিনের পড়াশোনা

২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৩৯৬ নম্বরে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হন শারমিন আক্তার মিম। ১০ জানুয়ারি থেকে প্রথম সেমিস্টারের ক্লাসও শুরু করেন। আবাসিক হল না থাকায় মেসে থেকে পড়াশোনা চালাতে থাকেন তিনি। কিন্তু প্রতি মাসে থাকা-খাওয়া বাবদ প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হতো। যেটা দরিদ্র রিকশাচালক বাবার পক্ষে জোগান দেয়া অসম্ভব। তাই গত এক মাস যাবৎ বাড়িতেই বসে আছেন শারমিন।

Advertisement

শারমিন আক্তার মিম নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘাটকৈর গ্রামের রিকশাচালক জামাল হোসেন ও গৃহিণী মা মোরশেদা খাতুনের বড় মেয়ে। ছোট বোন শাহারা আফরিন মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

জানা গেছে, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া চার শতাংশের জমির মালিক জামাল হোসেন। সেখানেই টিন ও বুনের বেড়া দিয়ে তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস চারজনের। শারমিন আক্তার মিম ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। ২০১২ মান্দা এসসি পাইলট স্কুল ও কলেজ থেকে সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে বৃত্তি পান। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৫ সালে মাধ্যমিকে ফের জিপিএ-৫ এবং ২০১৭ সালের নওগাঁ সরকারি বিএমসি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ- ৪.২৫ অর্জন করেন।

হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা মিম এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এতদিন পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এখন উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও টাকার অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না তার পক্ষে।

Advertisement

শারমিনের মা মোরশেদা খাতুন বলেন, শত কষ্টের মাঝেও মেয়ে দুটিকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু উচ্চশিক্ষা নিতে মাঝপথে টাকার অভাবে মেয়ের স্বপ্ন এখন থেমে গেছে। স্বামীর একার আয় ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় এতদিন মেয়ে দুটিকে পড়াশোনা করিয়েছি। কিন্তু এখন আর কুলাতে পারছি না। সমাজে অনেক সহৃদয়বান ব্যক্তি আছেন যারা সহযোগিতা করলে আমার মেয়েটি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে।

আব্বাস আলী/এফএ/জেআইএম