জালিয়াতির মাধ্যমে স্বতন্ত্র এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের (কুমিল্লা-৩) বেতন-ভাতা তুলে জেলহাজতে গেছেন দুই ব্যক্তি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল ব্যক্তিরা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এমনকি মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আগেও আরেক এমপির টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তখনও তাদের কিছুই হয়নি।
জানা গেছে, সংসদের হিসাব শাখার কিছু কর্মকর্তা ও এমপির একান্ত সহকারী শাহীন তালুকদার মিলে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এই সভাপতির চার বছরের বেতন-ভাতার পুরো ৪৬ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে। বিষয়টি ধরা পড়ার পর সংশ্নিষ্ট এমপি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় প্রথমবারের মতো এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন সংসদ সচিবালয়ের কাছে জানতে চান, তিনি সংসদ থেকে কী কী সুবিধা নিয়েছেন। এরপর সংসদ থেকে জানানো হয়, তার মাসিক ভাতা, যাতায়াত সুবিধা, কমিটি বৈঠকে অংশগ্রহণের ভাতা সব মিলিয়ে তিনি ৪৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। অথচ তিনি এক টাকাও তোলেননি বলে দাবি করেছেন। এরপর জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। ওই মামলার আসামি হিসেবে সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন বাসার ও শাহীন তালুকদারকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
Advertisement
এর আগে নবম সংসদেও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ ডা. মতিউর রহমান মারা যাওয়ার পরে তার সই জাল করে বেতন-ভাতা তুলে নিয়েছিলেন সংসদের হিসাব শাখার কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, এমপিদের বেতন-ভাতা উত্তোলনের পুরো কাজ হিসাব শাখা পালন করে। মূল অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন বাসার এই মামলায় জেলহাজতে গেলেও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা ধরা ছোয়ার বাইরে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ন্ত্রণ বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়নি। এমনকি এ কাজে স্বপন বাসারকে সহযোগিতাকারী সহকারী সচিব (অর্থ-২) একেএম আবদুর রহিম ভূঞাকেই দেয়া হয়েছে তদন্তের দায়িত্ব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রহিম ভূঞা মঙ্গলবার বিকেলে জাগো নিউজকে বলেন, দুর্নীতিবাজরা আমাকে জানিয়ে দুর্নীতি করেনি। আমি স্বাক্ষর দেখেছি। স্বাক্ষরে মিল আছে। কিন্তু বুঝতে পারিনি জাল স্বাক্ষর।
এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বলেন, সংসদের মতো একটি জায়গায় এমন জালিয়াতি কল্পনাও করা যায় না। আমি বিষয়টি স্পিকারের দৃষ্টিতে এনেছি। ডেপুটি স্পিকারকেও জানিয়েছি।
Advertisement
এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, তদন্ত করে বিষয়টি ফয়সালা করা হবে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।
এইচএস/এমবিআর/এমএস