কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (৩ জুন) ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ছেলে ইরাজ ওয়ালীউল্লাহ এ মামলা করেন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলায় আসামিরা হলেন, প্রয়াত সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর আপন মামাতো ভাই ও সাবেক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি কামাল জিয়াউল ইসলাম ওরফে কে জেড ইসলাম (৮২), তার স্ত্রী ও নির্মাণ বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান খাদিজা ইসলাম (৬৯) এবং ছেলে রায়হান কামাল (৩২)।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ১৯৬২ সালের ১১ এপ্রিল জনৈক মোহাম্মাদ আশরাফ আলী গুলশান আবাসিক মডেল টাউনের ৯৬নং রোর্ডের, সিইএন (বি) ব্লকের ১০নং প্লটের ২২ কাঠা সম্পত্তি তৎকালীন ডিআইটি বর্তমান রাজউকের কাছ থেকে লিজ নেন। যা ডিআইটির অনুমতি নিয়ে ১৯৭০ সালের ১২ মার্চ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর নামে রেজিস্ট্রি দলিল মূলে হস্তান্তর হয়।
Advertisement
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্যারিসে চাকরি করার সময় ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর মারা যান সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। তখন গুলশানে তার ২২ কাঠা জমির প্লট এবং ভবনের মালিকানা তার ফরাসি স্ত্রী আন ম্যারি ওয়ালীউল্লাহ (আজিজা নাসরিন) এবং তাদের দুই সন্তান ইরাজ ওয়ালীউল্লাহ ও সিমিন ওয়ালীউল্লাহর নামে নামজারি করা হয়।
প্যারিসে অবস্থানরত ইরাজ ও তার মা-বোন ওই বাড়ি দেখাশোনার জন্য ১৯৮১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ালীউল্লাহর আপন মামাতো ভাই কামাল জিয়াউল ইসলামকে আম-মোক্তারনামা দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা ১৯৮১ সালের ৫ মে ওই আম-মোক্তারনামা দেখিয়ে সেখানে সম্পত্তি বিক্রয় এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের কাছে সম্পত্তি বন্ধক প্রদানের ক্ষমতা অর্পিত মর্মে উল্লেখ করে নেন।
সে অনুযায়ী আসামি জিয়াউল ইসলাম সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের কাছ থেকে বাদী ও তার পরিবারের অজ্ঞাতে ওই সম্পক্তি বন্ধক রেখে ঋণ নেন। আম-মোক্তার নামায় মালিকের স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কথা থাকলেও কামাল জিয়াউল ইসলাম তার স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে ওই ভবন ও জমির মালিক সেজে তা আত্মসাতের জন্য নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘নির্মাণ বিল্ডার্স’কে দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
মামলায় আরও বলা হয়, ওই আম-মোক্তারনামা পাওয়ার আগে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে আরেকটি আম-মোক্তারনামা তৈরি করে ওই জমি ও ভবন বন্ধক দিয়ে ঋণ নেন এবং পরে আবার তা ফিরিয়ে দেন। অথচ জমি ও ভবনের প্রকৃত মালিকরা ওই ক্ষমতা দিয়ে কোনো আম-মোক্তারনামা তাদের দেননি।
Advertisement
‘লাল সালু’ ‘কাঁদো নদী কাঁদো’ উপন্যাসের লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ১৯৫১ ও ৬০ এর দশকে পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত প্যারিসে পাকিস্তান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করেন। ওই বছর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রবাসে থেকেই স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার চালান।
জেএ/এএইচ/আরআইপি