দেশজুড়ে

নতুন দ্বার উন্মোচন করবে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি সার্ভিস

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্য দিয়ে মেঘনা নদীতে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি সার্ভিস। এর ফলে জেলা সদর থেকে গজারিয়া উপজেলার সড়ক পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও দূরত্ব কমে আসবে দুই থেকে তিন ঘণ্টার।

Advertisement

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) উপ-মহাব্যবস্হাপক মো. আশিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন।

মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে গজারিয়া উপজেলায় যেতে হলে নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কযোগে অন্তত ৭০ কিলোমিটার সড়ক পথ পাড়ি দিতে হতো। এখন ফেরি সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে মাত্র ১৫-২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জেলা সদর থেকে গজারিয়া হাইওয়ে পৌঁছানো যাবে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘণ্টায়। আর ফেরি পারাপারে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট।

এদিকে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নব-নির্মিত ফেরিঘাট এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে সেখানে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সেখানকার সাজ-সজ্জার কাজও শেষ।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস চালু হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার বিকল্প সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে। গজারিয়ায় ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, বাস্তবায়নাধীন শিল্পপার্ক, গার্মেন্টস এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে এ ফেরি সার্ভিস চালু করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পদ্মা সেতু নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে মংলা ও পায়রা বন্দরের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হবে গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ নৌ-ফেরি সার্ভিস রুট।

বিআইডব্লিউটিসির নিজস্ব কারিগর দ্বারা নির্মিত 'স্বর্ণচাপা' মিনি ইউটিলিটি টাইপ ফেরি দিয়ে প্রাথমিকভাবে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া রুটে এ সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ রুটে যানবাহনের চলাচলের সংখ্যা বাড়লে ফেরির সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

তবে স্থানীয়দের আশঙ্কা, মুন্সীগঞ্জ থেকে ফেরিঘাট এলাকা ও মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে গজারিয়া ফেরি ঘাট প্রান্ত থেকে ভবেরচর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত উভয় পাশের রাস্তার বেহাল দশার কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই ফেরি সার্ভিস। যতদ্রুত সম্ভব রাস্তা সংষ্কারের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থা আরও উন্নত করা হোক।

মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি সার্ভিসের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম তালুকদার জানান, নিজস্ব অর্থায়নে ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় স্বর্ণচাঁপা নামে ফেরিটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে যেহেতু নদীর দুই পাড়ের রাস্তা খারাপ তাই যানবাহনের তেমন কোনো চাপ পড়বে না। তাই আপাতত 'গাড়ির চাপ বুঝে' ফেরি সার্ভিসের সময় নির্ধারণ করা হবে।

Advertisement

২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী এই রুটে ফেরি সার্ভিস চালু করার জন্য নৌমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হয়। এতে সন্তুষ্ট স্থানীয়সহ উভয় উপজেলার জনসাধারণ। তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ভবতোষ চৌধুরী নুপুর/এফএ/জেআইএম