ঈমানের পর নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ৫ বার নামাজ আদায় করা ফরজ। আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ যথা সময়ে আদায় করাকে ফরজ করেছেন। কেউ যদি নামাজ পড়তে ভুলে যায় বা ঘুমিয়ে পড়ে, তবে তার করণীয় কী? এ প্রসঙ্গে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
Advertisement
কেননা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ পরিত্যগ করা কুফরি। প্রিয়নবির ঘোষণায় ইসলাম এবং কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী হলো নামাজ। তাই ইচ্ছা করে নয়, বরং ভুলে বা ঘুমিয়ে পড়ার কারণে যদি নামাজ পড়া না হয় তবে করণীয় সম্পর্কে প্রিয়নবি বলেন-
> হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে ভুলে গেলে যখনই তা (নামাজের কথা) স্মরণ হবে, আদায় করে নেবে।’
> হজরত আলি ইবনে আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, কোনো ব্যক্তি সালাত আদায় করতে ভুলে গেলে সালাতের ওয়াক্ত হোক বা না হোক, যে সময়ই তার মনে পড়বে, সে সময়ই সালাত আদায় করে নেবে।’
Advertisement
আরও পড়ুন > পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাআত সংখ্যা
> হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সালাত ভুলে ঘুমিয়ে পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ঘুমের বেলায় (নামাজ না পড়ায়) কোনো গোনাহ নেই, গোনাহ হলো জাগ্রত থাকার সময়। তোমাদের কেউ যদি সালাত আদায় করতে ভুলে যায় বা ঘুমিয়ে পড়ে তবে যে সময়ই মনে পড়বে বা জাগ্রত হবে, তখনই আদায় করবে নেবে।’
উল্লেখ্য যে, কোনো ব্যক্তি যদি নামাজের সময় ভুলে নামাজ না আদায় করে বা ঘুমিয়ে যায়; আর যখনই মনে হয় বা ঘুম থেকে জাগ্রত হয়, তখন যদি সূর্য ওঠার বা ডোবার সময় হয়; তবে করণীয় কী?
এ প্রসঙ্গে দু’টি মত পাওয়া যায়-- ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ, ইমাম মালেক ও ইসহাক, ‘সূর্য ওঠার এবং ডোবার সময় মনে হলে বা ঘুম থেকে ওঠলে, সে সময়ই নামাজ আদায় করবে।’ - অপর একদল আলেম বলেন, ‘সূর্য ওঠা বা ডোবা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সে সালাত পড়বে না।’ ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহিও এ মতের কথা ব্যক্ত করেছেন।
Advertisement
আরও পড়ুন > তারাবিহ নামাজ কত রাকাআত পড়বেন?
হজরত আবু বাকারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, তিনি একদিন আসরের নামাজের আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। শেষে ঠিক সূর্য ডোবার সময় তিনি জেগে ওঠেন। কিন্তু সূর্য পূর্ণভাবে না ডোবা পর্যন্ত নামাজ আদায় করলেন না।’ কুফাবাসী আলেমগণও এ মতটি গ্রহণ করেছেন।
কিন্তু ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহ আলাইহি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতটি গ্রহণ করেছেন। ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখিত হাদিসগুলো তাঁর নিজ গ্রন্থ জামে আত-তিরমিজিতে উল্লেখ করেছেন।
নামাজ পড়তে ভুলে গেলে বা ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণে যথা সময়ে নামাজ পড়তে না পারলে স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বা ঘুমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায় করে নেয়া।
আল্লাহ তাআরা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করেন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি