জাতীয়

ফাঁকা ফাঁকা কাউন্টার

এবার ঈদে যারা সড়কপথে বাড়ি ফিরবেন বলে মনস্থির করে রেখেছেন তাদের জন্য বাসের অগ্রীম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। আর এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে ১৪ তারিখের টিকিট।

Advertisement

বাস কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, ১৪ জুনের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ বা ১৭ জুন উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। সে হিসেবে ঈদের ছুটি শুরু ১৫ জুন থেকে। সে হিসেবে ১৪ জুনের টিকিটের চাহিদাই বেশি।

আরও পড়ুন : ঈদে দৌলতদিয়ায় ভোগান্তি কমাতে র‌্যাব-পুলিশ

Advertisement

তবে বাসের টিকিটি নিতে প্রতিবছর কাউন্টারগুলোতে যে অবস্থা দেখা যায় এবার তার চেয়ে ভিন্ন পরিস্থিতি দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গাবতলী ও কল্যাণপুরে ঘুরে অধিকাংশ কাউন্টার ফাঁকা পাওয়া গেছে। টিকিটের জন্য পরিচিত সেই উপচেপড়া ভিড়ের দৃশ্য নেই।

এসআর, নাবিল, ন্যাশনাল ও দেশ ট্রাভেলসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এবার অনলাইনে টিকিট বিক্রি করেছে। এসব বাস কাউন্টারের কর্মকর্তারা বলছেন, যার টিকিট দরকার তিনি ঠিকই কাউন্টারে আসতেন। ভোগান্তি বেশি হতো। কাউন্টারে ভিড় লেগে যেতো। ভোগান্তি কমাতেই কাউন্টারে টিকিট বিক্রির পরিবর্তে অনলাইনে অধিকাংশ টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে এর মধ্যেও টিকিটপ্রত্যাশীদের যা ভিড় হয়েছে তা বুধবারই বেশি ছিল বলে জানানো হয়েছে কাউন্টারগুলো থেকে। সেদিনই ১৪ জুনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন : জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা ৭০ টাকা

Advertisement

গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী আল হামরা পরিবহনের গাবতলী কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কোনো ভিড় নেই। দু’একজন আসছেন টিকিট নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ১৪ তারিখের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল। টিকিটও শেষ হয়েছে। ১৩ জুনেরও ৮০ শতাংশ টিকিট শেষ। তবে ১৫ তারিখের টিকিট এখনো আছে।

একই দৃশ্য গাবতলী হানিফ এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারে। সহকারী ম্যানেজার সফিকুল ইসলাম বাবু জানান, ১৪ জুনের সব রুটের টিকিট শেষ। ১৩ তারিখের টিকিটেও টান। পেছনের কিছু সিট আছে। তাও বেশ কিছু বুকিং দেয়া। ১৫ তারিখের টিকিট পর্যাপ্ত রয়েছে।

আরও পড়ুন : এখনও জমেনি গুলশানের ঈদ বাজার

কল্যাণপুরে ডিপজল বাস কাউন্টারের টিকিট মাস্টার আব্দুর সবুরও একই তথ্য জানান।

এবার শ্যামলী পরিবহনের ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রি হচ্ছে গাবতলীর পরিবর্তে কল্যাণপুরে। সেখানেও ভীড় কম। সব রুটের টিকিটও মিলছে।

ন্যাশনাল ও দেশ ট্রাভেল্স-এর টিকিটের কাটতি বেশি থাকায় টিকিট শেষ বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন : ‘দেশী দশ’-এ নতুন সব কালেকশন

গাবতলীতে নাবিল কাউন্টারে কথা হয় আশিকুর রহমান নামে রংপুরের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৪ তারিখের টিকিট কেনার জন্য রাত জেগে থাকলাম। কিন্তু দুই ঘণ্টার চেষ্টার পরও সহজ ডটকম ওয়েটসাইটেই ঢুকতে পারিনি। পরে সকালে ঢুকতে পারলেও টিকিট শেষ। কাউন্টারেও ব্যবস্থা নেই।

নাবিল পরিবহনের গাবতলী কাউন্টার ম্যানেজার আবু সাঈদ সুইট বলেন, এবারও ভোগান্তি কমাত অনলাইনে নাবিলের টিকিট বিক্রি চলছে। এবার ১২, ১৩, ১৪ তারিখের টিকিট বিক্রির জন্য অনলাইনে ছাড়া হয়েছে। বাকি ঈদ যাত্রা ও স্বাভাবিক দিবসের টিকিট বিক্রি চলছে কাউন্টারেই।

তিনি বলেন, ১৪ তারিখের টিকিটের সবচেয়ে চাহিদা বেশি। ১২ ও ১৩ তারিখের টিকিটেরর চাহিদাও বেশ রয়েছে।

আরও পড়ুন : শেষ পর্যন্ত ঈদে মুক্তি পাচ্ছে না ভাইজান ও সুলতান

তিন কাউন্টার ঘুরে কল্যাণপুরে শ্যামলী কাউন্টারে কুড়িগ্রাম যাওয়ার টিকিট পান সাজিদুল হক। তিনি বলেন, এবারের টিকিট কেনার হিসেব খুব খারাপ। সবার টার্গেট যেন একই দিন। ১৪ তারিখে রাতের টিকিট মিললেও তা কাঙ্ক্ষিত নয়। পরিবারের ২ সদস্য যাবেন দিনাজপুর। কিন্তু এক সারিতে মিলছে না টিকিট। দু’টি টিকিট থাকলেও তা আবার একদম পেছনে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পেছনের সিটে বসে রওয়ানা দিলে ঈদটাই মাটি হয়ে হয়ে যেতে পারে ভেবে খারাপ লাগছে।

বাড়ি ফেরা শুরু ঈদের এখনও সপ্তাহ দুই বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। সাধারণত যারা চাকরি করেন না আপাতত যাদের ঢাকাতে কাজ নেই তারাই একটু আগে আগে বাড়ি ফিরছেন। একটু আগে বাড়ি ফিরে কম ভোগান্তিতে পৌঁছানোর আশাতেও অনেকে বাড়ি ফিরছেন।

তেমনই একজন রাজশাহী পুঠিয়ার সাহেরা খাতুন। তিনি বলেন, স্বামী বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। ফিরবেন ১৪ তারিখ রাতে। রাস্তায় যানজটের আশঙ্কায় আগেই সন্তানসহ আমি বাড়ি ফিরছি আজ।

জেইউ/এনএফ/আরআইপি