সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি নারীরা দেশে ফিরছে স্রোতের মতো। গত এক সপ্তাহে এসেছেন দেড় শতাধিক। আজ রাত সাড়ে ৮টায় আসছেন আরও ৪০ জন। এর মধ্যে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফিরছেন ৩ জন কর্মী।
Advertisement
এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। এরা সবাই অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। পরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহায়তায় এসব নারী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
সৌদি ফেরত এসব নারীদের মধ্যে রয়েছেন- রূপগঞ্জের সাথী, ভোলার জোসনা, কেরানীগঞ্জের মল্লিকা, বরগুনার শাহনাজ, কক্সবাজারের শাকিলা, দিনাজপুরের মনজুরা বেগম, ফরিদপুরের মাজেদা বেগম, নওগাঁর শম্পা প্রমুখ।
দেশে ফিরে আসা মল্লিকা জাগো নিউজকে জানান, সৌদি আরবে প্রতিনিয়ত তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তাকে আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক দেয়ার পাশাপাশি রড গরম করে ছেকা পর্যন্ত দেয়া হয়। দিনাজপুরের মনজুরা বেগম বলেন, আমার পাসপোর্টসহ ইজ্জত সম্মান সব দিয়ে এসেছি। মালিকের নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের দূতাবাসে যাই। দূতাবাস থেকে আমাকে ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
Advertisement
নির্যাতনের শিকার নারী কর্মীরা দল বেঁধে দেশে ফিরছেন কি কারণে, মন্ত্রণালয় কোনো দায়িত্ব নেয় না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টির প্রতি নজর রাখছি। বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে আমাদের কর্মীরা তৎপর রয়েছেন।’
ফিরে আসা সব নির্যাতিত নারী কর্মীদের জন্য যা যা করণীয় তার সবই করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) দেয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালে অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন, যা মোট অভিবাসন সংখ্যার ১৩ শতাংশ।
১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত একা অভিবাসন প্রত্যাশী নারী শ্রমিককে অভিবাসনে বাধা দেয়া হলেও পরবর্তীতে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে।
Advertisement
আরএম/এমআরএম/পিআর