চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় হাংঝৌ শহরের এক বার থেকে ফোনকল পায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে সন্দেহজনক এক স্যুটকেস পায় তারা। স্যুটকেসের ভেতর নগদ দুই মিলিয়ন ইউয়ান ছিল। এক সঙ্গে এত টাকা যে কারো জীবন বদলে দিতে পারে।
Advertisement
কোথা থেকে আসল এত টাকা? তারই অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এলো, নিজের প্রাক্তন প্রেমিকার জন্য ব্রেকআপ ফি হিসেবে এই বিশাল অংকের অর্থ এনেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি ওই টাকা ভর্তি স্যুটকেস প্রাক্তন প্রেমিকাকে দিয়ে চলে যান। কিন্তু এই অর্থ ওই নারীর কাছে কম মনে হওয়ায় তিনি স্যুটকেসটি বারেই ফেলে রেখে চলে যান। পরে ওই পুরুষকে টাকা ফেরত দেয় পুলিশ।
স্যুটকেসে যে পরিমাণ অর্থ ছিল তা দিয়ে চীনে একটি বাড়ি কেনা যায়। শুধু ব্রেক-আপের জন্য এত টাকা জরিমানা দেওয়ার ব্যাপারটি অনেককেই স্তম্ভিত করেছে। তবে ওই ব্যক্তির প্রাক্তন প্রেমিকা পুলিশকে বলেন, আমি টাকা গুলো না নিয়েই চলে গিয়েছিলম। কারণ তা সামান্যই ছিল। আমি তাকে টাকা নিয়ে চলে যেতে বলেছিলাম। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে ব্রেক-আপ ফি আসলে কি?
প্রেম করলে ডেটিংতো খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আর ডেটিংয়ের অংশ হিসেবে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া বা সঙ্গীর জন্য উপহার কেনা বাবদ ভালোই খরচ হয় দু’পক্ষের। কিন্তু সবার সম্পর্কতো আর চিরদিন থাকে না। অনেক ক্ষেত্রেই প্রেমিক বা প্রেমিকা বিচ্ছেদ ঘটান। চীনে এমন বিচ্ছেদের জন্যই এখন ব্রেক-আপ ফি গুনতে হচ্ছে। কিছুটা অদ্ভূত শোনালেও এটাই সত্যি যে ব্রেক আপের পর প্রাক্তন সঙ্গীকে ব্রেক-আপ ফি দিচ্ছেন চীনের প্রেমিক-প্রেমিকারা। দীর্ঘদিনের সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটার পর অনেকেই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন অপর পক্ষকে।
Advertisement
তবে এটা দিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্রেকআপ ফি দেয়াটা আসলে অনেকটা তালাকের পর যেমন ভরণপোষনের খরচ দেওয়া হয় তার মতোই। এক পক্ষ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে গেলে অপর পক্ষের যে মানসিক ক্ষতি হচ্ছে তা কিছুটা পূরণের জন্যই এই জরিমানা। অনেকেই আবার বলছেন সম্পর্কে থাকাকালীন একজন আরেকজনের পেছনে যে খরচ করেছেন, সেটাই আসলে পুষিয়ে দেওয়া হয়।
ব্রেক-আপের উদ্যোগ যে নেবেন এই জরিমানা আসলে তাকেই দিতে হচ্ছে। সাধারণত প্রেমিকরাই ব্রেকআপ করেন এবং জরিমানা তারাই দেন। তবে সম্প্রতি নারীরাও এখন জরিমানা দিচ্ছেন। সম্পর্ক থাকাকালীন সঙ্গীর পেছনে যে টাকা খরচ করা হয়েছে সেটাই আসলে ব্রেক-আপ ফি হিসেবে দেয়া হয়।
কেউ কেউ ডেটিংয়ের খরচের ওপর আবার কেউ ব্রেক-আপের কারণে কতটা মানসিক ক্ষতি হলো সেটার ওপর বিবেচনা করে একটা মূল্য নির্ধারণ করেন।
টিটিএন/আরআইপি
Advertisement