রাজনীতি

রমজানে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন : মোশাররফ

রমজানের সময় বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘কাল আদালতে জামিন হলেও খালেদা জিয়া কারাগারে থাকবেন। জনগণের দাবির কাছে সরকার মাথা নত করতে বাধ্য, তাই শুধু আদালতের দিকে না তাকিয়ে থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই।’

Advertisement

‘খুলনা সিটি নির্বাচনে জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে বিএনপিপ্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবে। এছাড়া কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

‘খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ’ ব্যানারে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রমজান মাসে প্রস্তুতি নিতে হবে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য। যেভাবে কোটা আন্দোলনের কাছে সরকার মাথানত করেছে তেমনিভাবে জনগণের দাবির কাছেও সরকার মাথানত করবে। জনগণ যা চায় সরকার তাতে বাধ্য হয়।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘জনগণের ক্ষোভ গণআন্দোলনে পরিণত হবে। আমরা কিছুদিন আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন দেখেছি। তিনদিনের মধ্যে যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল, প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হলেন সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিল ঘোষণা করতে। যারা আন্দোলন করছিল তারা সংস্কার চেয়েছিল কিন্তু তিনি বাতিল করে দিলেন। তিনদিন আগেও তিনি জানতেন না আন্দোলন এমন রূপ ধারণ করবে।’ বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা বলতে চাই অতীতে আন্দোলন সংগ্রাম হয়নি, এখনও কোনো নোটিশ দিয়ে হবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলন যেমন হঠাৎ করে, যেহেতু তাদের যৌক্তিক দাবি; আজ জনগণের কাছেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার যৌক্তিক দাবি। ১৮ কোটি মানুষের মা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিও যৌক্তিক দাবি।’

তিনি বলেন, ‘কেন কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এটা করা উচিত ছিল। প্রজ্ঞাপন জারি করে অনতিবিলম্বের এর সমাধান করা দরকার।’ বিএনপির আন্দোলনের শক্তি নেই বলে যারা অবজ্ঞা করেন তাদের উদ্দেশ্যে দলের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা বলিনি আমরা একা করবো। এদেশের জনগণের দাবি জনগণ আদায় করবে। আমরা তাদের সঙ্গে থাকবো। ইনশাল্লাহ সেই সময় চলে আসবে।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে বিরাট একটি প্রশ্ন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কী হবে? একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের নেত্রী এক বছর আগে পরিষ্কার করে বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক আর সেটা হতে হলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড প্রয়োজন। লেভেলে প্লেইং ফিল্ড করতে হলে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার, সংসদ বাতিল এবং নির্বাচনের সময়ে কিছুদিনের জন্য সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ দাবি যখন জনগণের দাবিতে পরিণত হলো তখনই কিন্তু ষড়যন্ত্র হলো কীভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী জাতীয় নির্বাচন থেকে মাইনাস করা যায়। তার ষড়যন্ত্রের অংশই হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা বানোয়াট মামলায় অন্যায়ভাবে পাঁচ বছর সাজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ।’

Advertisement

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হতো না। এখন পর্যন্ত তাকে রাজনৈতিকভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে। কালকে যদি জামিন হয়ও কিন্তু তাকে রাজনৈতিকভাবে কারাগারে রাখা হবে। অতএব শুধুমাত্র আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না রাজনৈতিকভাবে নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।’

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে আগামীকাল খুলনায় বিপুল ভোটে ধানের শীষের জয় হবে। বিএনপির মঞ্জু বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘সেখানে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন নৌকার পক্ষে কাজ করছে।‘

প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, বিএনপি নেতা মীর শরাফত আলী শপুসহ আয়োজক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএআর/এমএস