দেশজুড়ে

ইমামের মাথায় মল-মূত্র ঢাললো পরাজিত প্রার্থী

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে হেরে এক ইমামের মাথায় মল-মূত্র ঢেলে লাঞ্ছিত করেছে পরাজিত প্রার্থী ও তার লোকজন। সেই সঙ্গে মল-মূত্র ঢালার ওই দৃশ্যটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা।

Advertisement

বরিশালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত ইমাম আবু হানিফা (৫০) কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার সুপার ও নেছারবাগ বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম।

এ ঘটনায় রোববার সকালে ইমাম আবু হানিফা বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযুক্তরা হলো- পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার, সহযোগী জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, মো. মিনজু, সোহেল খন্দকার ও মিরাজ হোসেন। অভিযুক্ত সবার বাড়ি কাঠালিয়ায়।

Advertisement

এদিকে, সমাজের একজন সম্মানিত ব্যক্তি ও মসজিদের ইমামকে অপমান-লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

ইমাম আবু হানিফা ও স্থানীয়রা জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হন এইচ এম মজিবর ও জাহাঙ্গীর খন্দকার।

এই নির্বাচনে ইমাম আবু হানিফা সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন এইচ এম মজিবর রহমান। পাশাপাশি সভাপতি প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার হেরে যায়। এ নিয়ে আবু হানিফার সঙ্গে জাহাঙ্গীর খন্দকারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ইমাম আবু হানিফাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে তার পথরোধ করে পরাজিত প্রার্থী ও তার লোকজন।

Advertisement

এ নিয়ে ইমামের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকারের এক সহযোগী ইমাম আবু হানিফার হাত ধরে ফেলে। পাশাপাশি জাহাঙ্গীর খন্দকার ইমামকে ধরে রাখে। এ সময় তার আরেক সহযোগী হাঁড়িভর্তি মল-মূত্র এনে ইমাম আবু হানিফার মাথায় ঢেলে দেয়। এতে উল্লাসে ফেটে পড়া দৃশ্যটি ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা।

এ বিষয়ে রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং দেখেছি। যতই বিরোধিতা থাকুক সমাজের একজন সম্মানিত ইমামকে এভাবে কেউ অপমানিত করতে পারে ভাবতেও ঘৃণা লাগে। বিষয়টি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল হক জানান, মাদরাসার সুপার আবু হানিফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

সাইফ আমীন/এএম/আরআইপি