প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পথে মহাকাশে ছুটছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার মহাকাশে ডানা মেলছে বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল লঞ্চপ্যাড থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় ১১ মে রাত ৩টা) এটি উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে।
Advertisement
আরও পড়ুন >> মহাকাশে বাংলাদেশের উপস্থিতি জানান দেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
এর আগে বেশ কয়েকবার উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মহাকাশে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশের প্রথম এ স্যাটেলাইট।
কীভাবে মহাকাশে পৌঁছাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’। মার্কিন এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ফ্যালকন-৯ রকেট ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালের লঞ্চিংপ্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে নিয়ে মহাকাশের পথে উড়াল দেবে। ফ্যালকন-৯ রকেটে রয়েছে চারটি অংশ। এর উপরের অংশে থাকবে স্যাটেলাইট, নিচে অ্যাডাপটর। এরপরই রয়েছে স্টেজ-২। এছাড়া একেবারে নিচের অংশে স্টেজ-১।
Advertisement
উৎক্ষেপণের পরপর স্টেজ ওয়ান চালু হয়ে উপরের দিকে উঠতে শুরু করবে ফ্যালকন-৯। তীব্র গতিতে ছুটবে মহাকাশের দিকে।
আরও পড়ুন >> স্যাটেলাইটে লেখা থাকছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’
তবে উৎক্ষেপণের সময় আগ্রহীদের ক্যানাভেরালের লঞ্চিংপ্যাড থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে অবস্থান নিতে হবে। উৎক্ষেপণের পর প্রায় সাত মিনিট দেখা যাবে এ রকেট। তীব্র বেগে মহাকাশপানে ছুটতে থাকা এ উচ্চগতির রকেট সাত মিনিট পর অদৃশ্য হয়ে যাবে।
নির্দিষ্ট সময় পর রকেটের স্টেজ-১ খুলে ক্যানাভেরালের লঞ্চিংপ্যাডে ফিরে আসবে। এরপর চালু হবে স্টেজ-২। পুনরায় ব্যবহারযোগ্য স্টেজ-১ পৃথিবীতে এলেও স্টেজ-২ একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত স্যাটেলাইটকে নিয়ে গিয়ে মহাকাশেই অবস্থান করবে।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রকল্প পরিচালক মো. মেজবাহুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রথম ধাপটি হলো লঞ্চঅ্যান্ড আর্লি অরবিট ফেজ (এলইওপি)। দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে স্যাটেলাইট ইন অরবিট। প্রথম ধাপে ১০ দিন এবং পরের ধাপে ২০ দিন লাগতে পারে। লঞ্চিংপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণ স্থান ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে যাবে এ স্যাটেলাইট।
আরও পড়ুন >> স্যাটেলাইটে কী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ
পরে ৩৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ-২ খুলে যাবে। স্যাটেলাইট উন্মুক্ত হওয়ার পরপর এর নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশনে চলে যাবে। ওই তিন স্টেশন থেকে স্যাটেলাইটটিকে নিয়ন্ত্রণ করে এর নিজস্ব কক্ষপথে (১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লট) স্থাপন করা হবে।স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগবে। সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে হস্তান্তর করা হবে। গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশনের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।
এসআইএস/এমএআর/জেআইএম