রাজধানীর বাবুবাজারের পাইকারি ওষুধ মার্কেটে অভিযানে ১৫ কোটি টাকার নকল ও ভেজাল ওষুধ জব্দের কথা র্যাব জানালেও ব্যবসায়ীদের মতে এর বাজার মূল্যে ৫০ লাখ টাকার বেশি নয়।
Advertisement
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওষুধ প্রশাসন ও র্যাব নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করতে এবং ব্যবসায়ীদের হেয় প্রতিপন্ন করতে টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে বলছে। লঘু অপরাধে (ওষুধ জব্দ, আর্থিক জরিমানা ও জেল) গুরুদণ্ড দেয়া হয়েছে। কি কি ওষুধ জব্দ করা হলো তার কোনো তালিকাও দেয়া হয়নি।
মঙ্গলবার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির (বিসিডিএস) কয়েকজন শীর্ষ নেতা অভিযান সম্পর্কে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এ কথা বলেন।
এর আগে সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ওষুধ প্রশাসন ও র্যাব অভিযান চালায়। অভিযানে ১৫ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ, পাঁচজনকে কারাদণ্ড ও আট লাখ টাকা জরিমানা করে বলে জানায় র্যাব। প্রতিবাদে বাবুবাজারের পাইকারি ওষুধের মার্কেটের দোকানপাট মঙ্গলবার বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, অভিযানে র্যাব ও ম্যাজিস্ট্রেটের এমন আচরণের প্রতিবাদেই মূলত মঙ্গলবার দিনভর ওষুধের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে।
Advertisement
বিসিডিএসের এক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত কফের সিরাপ উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে, এ সব সিরাপ বিক্রি করা যাবে না মর্মে কোনো নোটিশ ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে দেয়া হয়নি। ব্যবসায়ীদের কাছে বিভিন্ন কোম্পানি কফের সিরাপ বিক্রি করেছে। অথচ গত রাতের অভিযানে কফের সিরাপ বিক্রির অপরাধে শুধু ওষুধই জব্দ করা হয়নি, আর্থিক জরিমানা ও একই সঙ্গে জেলও দেয়া হয়েছে। বিনা নোটিশে দেশীয় ওষুধ বিক্রির দায়ে ওষুধ জব্দ, আর্থিক জরিমানা ও শাস্তি দেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বিসিডিএসের পাঁচজন কর্মকর্তা সারা রাত জেগে অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও র্যাব কর্মকর্তাদের সহায়তা করেছে। অথচ একই সঙ্গে তিনটি শাস্তি না দিতে অনুরোধ জানালেও তারা শুনেননি। শুধু তাই নয়, জরিমানার অঙ্ক সম্পর্কে আপত্তি জানালে তা দ্বিগুণ করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
অভিযান সম্পর্কে বিসিডিএস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি (ঢাকা) আবদুল হাই বলেন, তারা নকল ও ভেজাল অভিযানের পক্ষে অতীতেও অবস্থান নিয়েছেন, এখন আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। কিন্তু গত রাতের অভিযানকালে কিছু দেশীয় ওষুধ জব্দ করা হয়েছে যেগুলোর বিক্রি নিষিদ্ধ এমন কোনো নোটিশ বা চিঠি তারা ওষুধ প্রশাসন অধিদফর থেকে পাননি। কিন্তু এ অপরাধে ওষুধ জব্দের পর আর্থিক জরিমানা ও জেল দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ভালো লাগেনি। তবে অভিযানের কারণে দোকান বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত বিসিডিএস নেয়নি।
আগামী ১০ মে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক নকল ও ভেজালবিষয়ক অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছেন। সেখানে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি। এমইউ/এএইচ/এমএস
Advertisement