আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রীকে অবরুদ্ধ করেছে আমিরাতের সেনাবাহিনী

ইয়েমেনের প্রত্যন্ত অঞ্চল সোকোত্রা দ্বীপের সমুদ্র ও বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক বাহিনী। সেখানে আমিরাতের চারটি সামরিক বাহন ও শতাধিক সৈন্য মোতায়েনের একদিন পর দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিলো আমিরাত।

Advertisement

শনিবার ইয়েমেনের সরকারি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আমিরাতের এ পদক্ষেপকে আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, সোকোত্রার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আমিরাতের সেনাবাহিনী ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ ওবাইদ বিন দাঘর ও আরো ১০ মন্ত্রীকে দ্বীপে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। শুক্রবার ওই দ্বীপ ত্যাগ করতে দেয়া হয়নি তাদের।

তিনি বলেন, ইয়েমেনের সরকার থাকা সত্ত্বেও সোকোত্রা দ্বীপের সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর দখল করেছে আরব আমিরাত। সোকোত্রায় আরব আমিরাত যা করছে, তা রীতিমতো আগ্রাসন।

Advertisement

এদিকে, ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় সোকোত্রা দ্বীপে তদন্ত কর্মকর্তাদের পাঠানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সোকোত্রা দ্বীপে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে। এছাড়া দ্বীপটিতে জঙ্গি বিমান ও বড় ধরনের সামরিক যানের জন্য ৩ হাজার মিটার দীর্ঘ রানওয়ে রয়েছে।

তবে সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত এই দ্বীপটি ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নেয়। সেখানে সামরিক অভিযান চলছে বলে নিশ্চিত করেছে আবু ধাবি।

দ্বীপের বাসিন্দারা বলেছেন, দ্বীপের সরকারি বিভিন্ন ভবনে বর্তমানে আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের ছবি ও আমিরাতের পতাকা উত্তোলন করেছে। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বীপে বিরল এক সফরে গেছেন ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী দাঘর। সেখানে যাওয়ার পর দ্বীপের বাসিন্দারা প্রধানমন্ত্রী দাঘরকে স্বাগত জানান।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এই দ্বীপে সেনা মোতায়েন করে আমিরাত। এদিকে, দ্বীপে আমিরাতের সৈন্য সমাবেশের নিন্দা জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। একই সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ ইয়েমেন ও দেশটির সাবেক প্রসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর আল হাদির সমর্থনে স্লোগানও দেন তারা।

হাদির সরকারের অন্যতম মিত্র আমিরাত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই করছে। আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট হাদি নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে হুথিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটও হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে, হুথিদের ইরান সমর্থন দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে দক্ষিণ ইয়েমেনে প্রভাব বিস্তারের জেরে আব্দ রাব্বু মানসুর আল হাদি ও আরব আমিরাতের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল তাতে ফাঁটল ধরেছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই বলছে, আমিরাত দখলদারের মতো আচরণ করছে বলে অতীতে অভিযোগ করেছিলেন হাদি।

এসআইএস/জেআইএম