ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন এক সময় বড় চাকরি করবেন, অভাবের সংসারে অভাব ঘোচাবেন। স্বপ্ন পূরণের আশায় স্কুলেও ভর্তি হন। কিন্তু হাই স্কুলের গন্ডি পার হওয়া সম্ভব হয়নি। নিষ্ঠুর ভাগ্য ছাত্র বয়সেই শ্রমিক বানিয়ে দিয়েছে তাকে।
Advertisement
বলছিলাম বরিশালের সাইফুলের কথা। সংসারে হাল টানতে তিনি এখন রাজধানীতে রিকশা চালাচ্ছেন। রিকশা চালিয়ে যে আয় করেন তা দিয়ে নিজের এবং মা ও দুই ভাই-বোনের সংসারের খরচ মেটান তিনি।
মঙ্গলবার খিলগাঁওয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন তিনি। সেখানেই মে দিবস নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। এ দিন রিকশা চালানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দিবস সাহেব গো, আমরা কামলা। আমাদের কামলা খাটতেই হইবো।'
তিনি বলেন, স্কুলে পড়া অবস্থায় বাবাকে হারিয়েছি। এরপর বড় ছেলে হিসেবে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। গ্রামে মা ও ভাই-বোন আছে। সবার খরচের টাকা আমাকে জোগাড় করতে হয়ে। একদিন রিকশা চালানো বন্ধ রাখলে আমাকে কেউ টাকা দেবে না। তাই যত দিবসই যাক আমাকে রিকশা চালাতেই হয়।
Advertisement
মালিবাগ ডিবি অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক রড উঠানোর কাজে ব্যস্ত। এদের একজন খায়রুল বলেন, দিবস দিয়ে আমাদের কিছু হবে না। আমরা কাজ করলে টাকা পাবো, কাজ না করলে কেউ ফিরেও তাকাবে না। ঝড় বৃষ্টি যাই হোক খাবার টাকা জোগাড় করতে কাজ করতেই হবে।
কাকরাইলে পার্সেল উঠানো-নামানোর কাজে ব্যস্ত এস এ পরিবহনের শ্রমিকরা। এদের একজন রাব্বি বলেন, আমি নির্দিষ্ট বেতনে চাকরি করি। তবে আমাদের কোনো ছুটি নাই। এখানে সব দিবসেই কাজ চলে। কাজ না করলে চাকরি থাকবে না। তাই মে দিবস বলে আমাদের কিছু নেই। আমাদের যে কাজ তা করতেই হবে।
সুপ্রভাত পরিবহনের হেলপার রফিক বলেন, মে দিবস দিয়ে আমি কি করবো। আমি কাজ না করে বসে থাকলে কে খাওয়াবে? বড় লোকের কাজ না করলেও চলে। কিন্তু আমরা কাজ না করলে মুখে ভাত উঠবে না। তাই আমাদের জন্য কোন দিবস-টিবস নেই। খাবার জুটাতে প্রতিদিনই কাজ করতে হয়।
এমএএস/জেএইচ/আরআইপি
Advertisement