রোজার আরবি প্রতিশব্দ হলো সিয়াম। আল্লাহ তাআলা বছরে ৩০ দিন মানুষের জন্য সিয়ামকে ফরজ করেছেন। যা পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহ পালন করে থাকে। সিয়াম বা রোজা পালনের উদ্দেশ্য হলো নিজেকে পবিত্র করতে উপোস করা।পরহেজগার বা তাকওয়া অর্জনের লক্ষ্যে সুবহে সাদেক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত বৈধ পানাহার ও যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রোজা নষ্টকারী বিষয় থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত হওয়া।
Advertisement
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার নসিহত পেশ করেছেন। তবে বছরে ৫ দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। যা অনেকেরই জানা। এছাড়াও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ধরনের রোজা রাখাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আর তাহলো- ‘সাওমে বিসাল’।
সাওমে বিসাল হলো সেই রোজা, ‘যে রোজা একাধারে দুই বা দুয়ের অধিক দিন একটানা রাখা হয়; যার মাঝে ইফতার ও সাহরি খাওয়ার কোনো হিসাব নেই।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের রোজা রাখাকে নিষিদ্ধ করেছেন। যেহেতু এ রোজা পালনে রয়েছে অতিরঞ্জন, বাড়াবাড়ি এবং আত্মপীড়ন।
Advertisement
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাওমে বিসাল থেকে দূরে থাকো।’ এ কথাটি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩ বার পুনরাবৃত্তি করেছেন।
সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তোম ‘বিসাল’ করে থাকেন? তিনি বললেন, ‘এ ব্যাপারে তোমরা আমার মতো নও। কারণ, আমি রাত যাপন করি, আর আমার প্রভু আমাকে পানাহার করিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা ওই আমল করতে উদ্বুদ্ধ হও, যা করতে তোমরা সক্ষম।’ (বুখারি ও মুসলিম)
তবে ইফতার না করে সাহরি পর্যন্ত বিসাল করা যেতে পারে; যদি রোজাদারের কোনো কষ্ট না হয়। যেহেতু হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা বিসাল করো না। কিন্তু যদি তোমাদের মধ্যে কেউ তা করতেই চায়, তাহলে সে সাহরি পর্যন্ত করুক। অর্থাৎ ইফতার না করে সাহরি গ্রহণ করবে। (বুখারি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুবহে সাদেক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত যথাযথভাবে রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। দীর্ঘ ২/৩ দিন যাবত ইফতার ও সাহরি গ্রহণ না করে প্রিয়নবির নিষেধাজ্ঞা জারি করা ‘সাওমে বিসাল’ থেকে বিরত থেকে সুন্নাতের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Advertisement
এমএমএস/আরআইপি