পবিত্র শবে-বরাত, বুদ্ধপূর্ণিমা, মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ৫ দিন দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকছে। এতে সীমান্তের দুই পাশের ট্রাকজট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সংকটও দেখা দিতে পারে। তবে এ সময় কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টধারী যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন।
Advertisement
দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। মাত্র সাত দিনের এলসিতে পণ্য আনা যায় এ বন্দর দিয়ে। বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮১ কিলোমিটার। আড়াই ঘণ্টায় চলে আসা যায় চেকপোস্টে। আর সেকারণেই আমদানিকারকরা পণ্য আমদানির জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে থাকেন।
দু'দেশের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। শুক্র ও শনিবার (২৭-২৮ এপ্রিল) সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও শনিবার আমদানি-রফতানি চলবে। রোববার (২৯ এপ্রিল) বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটিতে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে। সোমবার (৩০ এপ্রিল) আমদানি-রফতানি ও বন্দরে কার্যক্রম চলবে। মঙ্গল ও বুধবার (১-২ মে) মে দিবস ও পবিত্র শবে-বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটিতে আমদানি-রফতানিসহ বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার (৩ মে) বন্দরের কার্যক্রম শেষ হয়ে আবারও শুক্র-শনিবার (৪-৫ মে) সাপ্তাহিক ছুটিতে সব কিছু বন্ধ থাকবে। তবে আমদানি-রফতানি চলবে শনিবার।
লম্বা ছুটিতে বন্দর ও কাস্টমসের অনেক কর্মকর্তা নিজ নিজ বাড়িতে গেছেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। সে হিসেবে ৬ মে থেকে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এ বন্দরে।
Advertisement
বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, সরকারি ছুটি ছাড়া অন্যান্য দিন বন্দর ও কাস্টমে কাজ হলে এবং আমদানি-রফতানি চালু থাকলে ভাল হতো। ছুটি শেষে দ্রুত পণ্য চালান খালাস দিলে পণ্যজট অনেকটা কমে আসবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে বেনাপোলের মতোই পেট্রাপোলেও ট্রাকজট রয়েছে বলে জানান ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ ওয়েলফেয়ার স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বন্দরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁও টার্মিনালে কয়েকশ পণ্য বোঝাই ট্রাক বেনাপোলে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। লম্বা ছুটির কারণে এসব পণ্য পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল বন্দরে ঢুকবে ছুটি শেষে। এতে পেট্রাপোল বন্দরসহ বেনাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন পেট্রাপোল বন্দর থেকে রফতানি পণ্য নিয়ে আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ ট্রাক আসে বেনাপোল বন্দরে। আর বেনাপোল দিয়ে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে। দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। লম্বা ছুটির কারণে বন্দরে পণ্যজট তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় অফিস খুলে দ্রুত পণ্যচালান ডেলিভারি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জামাল হোসেন/এফএ/এমএস
Advertisement