সর্বশেষ ২০০৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফাইনাল খেলেছিল অলরেডরা। তারপর ইউরোপের ক্লাবগুলো এই শীর্ষ আসরে ফাইনালেই ওঠা হয়নি তাদের। আবারো ফাইনাল হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাদেরকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে রোমাকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। বিশেষ করে বললে মোহাম্মেদ সালাহর একার কাছেই হেরে গেছে রোমা। জোড়া গোল এবং জোড়া এসিস্ট করে লিভারপুলের জয়ে ভূমিকা রাখেন মিশরের এই ফুটবলার। সালাহ ছাড়াও জোড়া গোল করেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার রবার্তো ফিরমিনো। আরেকটি গোল করেন সাদিও মানে।
Advertisement
ঘরের মাঠ এনফিল্ডে শক্তিশালী একাদশই নামান ক্লপ। আগের দিন প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতার পর এদিন বেশ ফুরফুরে মেজাজেই খেলতে নামেন সালাহ। ম্যাচের ৫ মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় অলরেডরা। ফিরমিনোর দুর্দান্ত শট সত্ত্বেও তা গোলের দেখা পায়নি। ১৯ মিনিটে রোমার লেফট ব্যাক কলারভের দূরপাল্লার আচমকা শট লিভারপুলের গোলবারে লেগে ফিরে আসলে গোল বঞ্চিত বার্সাকে হারিয়ে সেমিতে আসা রোমা।
২৯ এবং ৩০ মিনিটে পরপর দুটি সহজ সুযোগ পেলেও একটি থেকেও গোল করতে পারেননি সাদিও মানে। ৩৫ মিনিটে লিভারপুলের হয়ে গোলের খাতা খোলেন মিশরের ফরোয়ার্ড লিভারপুল। বা পাশ থেকে ডি বক্সের সামান্য ভেতর থেকে বাকানো রংধনু শটে গোল করে লিভারপুলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন তিনি। ২০০৮ সালের স্টিভেন জেরার্ডের পর প্রথম অলরেড ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে গোল করলেন সালাহ। ৪৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক কাউন্টার এটাক থেকে আবারো রোমা ডিফেন্স এবং গোলকিপার এলিসনকে বোকা বানিয়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন সালাহ। এর ফলে মৌসুমের ৪৭টি ম্যাচে ৪৩টি গোল করলেন তিনি।
বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও লিভারপুলের দুর্দান্ত আক্রমণভাগের কল্যাণে সেটি আর পেরে ওঠেনি রোমা। ৫৬ মিনিটে সেনেগালের ফরোয়ার্ড সাদিও মানেকে দিয়ে এবার গোল করান সালাহ। ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকেও যেন গোলের ক্ষুধা মিটেনি লিভারপুলের। ৬১ মিনিটে সেই সালাহর কল্যাণেই ম্যাচে নিজের প্রথম গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ফিরমিনো। এক হালি গোল খেয়ে যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে রোমানরা। এই সুযোগে ৬৮ মিনিটে আবারো ফিরমিনোর গোল করলে ৫-০ গোলের বিশাল লিড পায় ক্লপের দল।
Advertisement
ম্যাচের ৭৮ মিনিটে সালাহর বদলি হিসেবে ড্যানি ইংসকে নামান কোচ। ম্যাচের রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলো আসে শেষ দশ মিনিটে। ৮১ মিনিটে রোমার হয়ে একটি সান্ত্বনাসূচক গোল করেন এডিন জেকো। ৮৫ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর জিমস মিলনারের হ্যান্ডবলের সুবাদে পেনাল্টি পায় রোমা। স্পট কিক থেকে গোল করেন পেরোত্তি। ২ গোল শোধ দিয়ে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে রোমা কিন্তু আর শেষ রক্ষা হয়নি। ৫-২ গোলের জয় নিয়েই ফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে রইল লিভারপুল। দ্বিতীয় লেগে রোমার মাঠে ড্র করলেই ফাইনালে উঠে যাবে তারা। রোমার সামনে সুযোগ থাকবে এওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার সুযোগ।
আরআর/বিএ