সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বারবার সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিরোধ সৃষ্টির উস্কানি দিচ্ছে বিএনপি এমন অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Advertisement
শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেখানে সেনাবাহিনী প্রয়োজন সেখানে সরকার কখনও না করেনি। কিন্তু আপনি এখন সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী বলে চিৎকার করছেন, তার মানে একটা উস্কানিমূলক প্রবণতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা বিরোধ বাধানোর উস্কানি দিচ্ছেন। এটা কিন্তু দেশের জন্য ভালো নয়।’
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনি নিজে যা করেননি, সেটা দাবি করেন কেন? এটা অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কি সে রকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে? তাহলে অযৌক্তিক দাবি করে সেনাবাহিনীকে কেন বিতর্কিত করতে চাইছেন? এটা হলো আমার প্রশ্ন।’
Advertisement
কাদের বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই বিএনপি নেতাদের তারা যখন ক্ষমতায় ছিলো, তখন কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছিল? একটা নির্বাচনেও না। সিটি কর্পোরেশন থেকে জাতীয় নির্বাচনে, অনেক ইলেকশন তো হয়েছে। আপনারা তো সেনাবাহিনী নিয়োগ করেননি।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী নিয়োগের যৌক্তিকতা কতটুকু? সে রকম পরিস্থিতি হলে সেনাবাহিনী নিয়োগ করবে কী না- সেটা ইলেকশন কমিশন সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে। ইলেকশন কমিশন ডিমান্ড দেবে। কারণ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচনের সময় ইসির অধীনে গেলেও সেনাবাহিনী কিন্তু যাবে না। সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পরিস্থিতি যদি সেনাবাহিনী নিয়োগের মতো হয় তাহলে সরকারও সায় দিতে পারবে। কিন্তু সে রকম পরিস্থিতির উদ্ভব না হলে শুধু শুধু সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী বলেন। আমি রাষ্ট্রীয় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতায় থাকাকালে যারা (বিএনপি) অভিযোগ করছেন, আমি তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করবো এই প্রতিষ্ঠানটাকে (সেনাবাহিনী) বিতর্কিত করবেন না।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে, বিশেষ করে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি যে সমস্ত দেশে আছে, যে কোনো নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী সব নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করতে পারে। এই যে কয়েকদিন আগে আমাদের পাশের রাজ্যে ত্রিপুরায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিধান সভার নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন।
Advertisement
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশে মন্ত্রীও পারবে না, এমপিও পারবে না। সব দেশে যেটা হচ্ছে, আমাদের দেশে সেই সুযোগ কেন থাকবে না? আমরা কিন্তু মন্ত্রীর জন্য চাই নাই। আমরা নির্বাচন কমিশনকে একটা প্রপোজাল দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করতেও পারে, নাও করতে পারে।
প্রপোজাল দিয়ে এসেছি, যে এমপিরা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বা স্থানীয় নির্বাচনে ক্যাম্পেইনের সুযোগ তারা (এমপি) দাবি করতে পারে এবং এই সুযোগটি তাদের দেয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী হওয়াটা কি আমার অপরাধ? ফখরুল সাহেব রংপুর সিটি নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করলেন। আমি সেখানে যেতে পারলাম না। তিনি মহাসচিব, আমিও মহাসচিব। এটা কি লেভেল প্লেইং ফিল্ড? বেগম জিয়া করতে পারবেন, শেখ হাসিনা পারবেন না। এটা কি লেভেল প্লেইং ফিল্ড? আমি যুক্তির ভাষায় কথা বলতেছি, এখানে জোড়াজুড়ির করে তো কিছু হবে না।’
এইউএ/জেএইচ/পিআর