জাতীয়

লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে সড়কে

কলেজ ছাত্র রাজীবের মৃত্যুতে কাঁদছে মানুষ। বেপরোয়া বাসচালক রাজীবের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে ফের আতঙ্ক ছড়ালো সড়কে। সড়কের কান্না যেন থামছেই না। দিন যত যাচ্ছে লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। গত বছর সড়ক দুর্ঘটনাতেই মারা গেছে সাত হাজার ৩৯৭ জন। আহত হয়েছেন ১৬ হাজার ১৯৩ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চার হাজার ৯৭৯টি দুর্ঘটনা ঘটে।

Advertisement

অপরদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ জানিয়েছে, ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৪৫ জন। ২০১৬ সালে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৪৪ জন। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৭.৩৬ শতাংশ বেশি। নিরাপদ সড়ক চাই’ আরও জানায়, ২০১৭ সালে মোট ৩ হাজার ৩৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০৮ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। ২০১৬ সালে ২ হাজার ৩১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৫ হাজার ২২৫ জন। ২০১৭ সালে আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৬৮৩ জন বেশি। ২০১৬ সালের তুলনায় আহতের সংখ্যা ২০১৭ প্রায় ৩২.৭৯ শতাংশ বেশি বলে রির্পোটে পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক ছোট ছোট দুর্ঘটনায় আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করা হয় যা প্রত্রিকায়ও প্রকাশ হয় না।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৮ শতাংশ খবর গণমাধ্যমে এলেও তার ৪০ শতাংশ প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, এর মধ্যে বাস দুর্ঘটনা এক হাজার ২৪৯টি, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান দুর্ঘটনা এক হাজার ৬৩৫টি, হিউম্যান হলার ২৭৬টি, কার-জিপ-মাইক্রোবাস ২৬২টি, অটোরিকশা এক হাজার ৭৪টি, মোটরসাইকেল এক হাজার ৪৭৫টি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ৩২২টি ও নছিমন-করিমনে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮২৪টি। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে পথচারীকে চাপা দেয়ার ঘটনা, মুখোমুখী সংঘর্ষ, খাদে পড়া ও চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনাও রয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপদজনক ওভারটেকিং, সড়ক-মহাসড়ক ও রাস্তাঘাটের নির্মাণ ক্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, মহাসড়ক ও রেলক্রসিংয়ে ফিডার রোডের যানবাহন উঠে পড়া ও রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকায় রাস্তার মাঝ পথে পথচারীদের যাতায়াতের কারণেই মূলত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

Advertisement

এএসএস/ওআর/এমএস