দেশজুড়ে

প্রয়োজন একটু সহযোগিতা...

নেই মাঠ, ভালো অবকাঠামো, ক্রীড়া সামগ্রী এমনকি প্রশিক্ষণ। তারপরও দেশ বিজয়ী। এমন সাফল্যে মুগ্ধ ঝিনাইদহের ক্রীড়াপ্রেমীরা, মুগ্ধ এলাকাবাসী। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলের পুরস্কার সোনার বুট আর শিরোপা। কী চাই আর এই শিশুদের কাছ থেকে? বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ঢাকাকে হারিয়ে শিরোপা অর্জনকারী সেই কন্যাদের নিয়ে এলাকায় এখন উৎসবের ঢল নেমেছে। দোহারো মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও দলের অধিনায়ক তহমিনা খাতুন উন্নতি জানায়, কে জানত ঝিনাইদহের শৈলকূপার এ অজো পাড়া গাঁ দোহারো স্কুলের শিশুরা ফুটবলে হবে দেশসেরা, ছিনিয়ে আনতে পারবে শিরোপা?

Advertisement

কেউ জানুক বা না জানুক অদম্য এই নারী শিশুরা কারও জন্য বসে থাকেনি। ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করেই শুরু করেছিল এই টুর্নামেন্ট। সেটাও ৮ মাস আগের কথা। লড়াই শুরু করেছিল ৬৫ হাজার স্কুলের মধ্যে। শুরুতেই চমক দেখাতে থাকে ইউনিয়ন, থানা ও জেলায়। অতঃপর খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন। গল্পটা আর থেমে থাকেনি। গোল কিপার বৃষ্টি জানায়, খেলার মাঠ আর সরঞ্জামাদি ভালো হলে আগামীতে আমরা আরও ভালো কিছু করতে পারব।

কোচ রবিউল ইসলাম জানালেন, ২০১৫ সালে তৃতীয় স্থান অধিকারী দোহারো দলটি খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জনের পথে পা বাড়াতে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হয়। বরিশাল বিভাগকে ৮-০ গোলে পরাজিত করে উঠে যায় সেমিতে, সেখানে রংপুর বিভাগকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে। এ যেন একের পর এক স্বপ্ন ছোঁয়ার গল্প।

এরপর ২৮ মার্চ ফাইনালে মুখোমুখি হয় ঢাকা বিভাগের সঙ্গে। খেলার প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে খুলনার প্রতিনিধিত্বকারী দোহারো কন্যারা। কিন্তু তারা দমে যাওয়ার পাত্র নয়। দ্বিতিয়ার্ধে ১-১ গোলে সমতা আনতে সক্ষম হয়। এভাবেই শেষ ফাইনাল খেলার নির্ধারিত সময়। তারপর টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের ব্যাবধানে ঢাকাকে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে আনে দোহারো মেয়েরা। বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম।

Advertisement

খেলার মাঠ সংস্কারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মেধাবী খেলোয়াড় আরও রয়েছে। পরিচর্যা করলে তারা আগামীতে জাতীয় দলে ভূমিকা রাখতে পারবে।

উন্নতির মা হামিদা ও বাবা দাউদ হোসেন জানান, এমন স্বপ্ন জয়ের গল্পে আনন্দে আত্মহারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। তবে শৈলকূপার এই দোহারো গ্রামের মেয়েরা দারিদ্র্যের কারণে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না। তাই পরিবাবরের দাবি সরকার যেন তাদের প্রতি দৃষ্টি দেন।

শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গণি এ বিষয়ে সকল প্রকারের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

আহমেদ নাসিম আনসারী/এফএ/এমএস

Advertisement