চুয়াডাঙ্গার ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল হাসপাতালে চোখের ছানি অপারেশনে ২০ রোগী চোখ তুলে ফেলার ঘটনায় চুয়াডাঙ্গায় এসে তদন্ত কাজ শুরু করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি।
Advertisement
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অডিট) মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ওই হাসপাতালে আসেন। এ সময় তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্থ চোখ হারানো রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং হাসপাতালে সকল বিভাগ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত সকল রোগীকে তদন্ত দলের কাছে উপস্থিত করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ইমপ্যাক্ট হাসপাতালের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তারক্ষীরা। সংবাদ সংগ্রহেও বাধা দেয় তারা। এক পর্যায়ে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়।
Advertisement
উচ্চ পর্যায়ের এ তদন্ত দল আগামী ১২ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের (হাসপাতাল-২) উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলামকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ বিন শহিদ ও মহাখালীর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল হাসপাতালে ২০ রোগী চোখের ছানি অপারেশন করান। ওই অপারেশন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে ঢাকায় নিয়োগকৃত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মেদ সাহিন।
দু’দিনের মাথায় অপরেশনকৃত ২০ রোগীর মধ্যে অসহায় ও হতদরিদ্র ১৯ রোগীর চোখে পচন শুরু হয় এতে রোগীরা চোখের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ছুটে আসেন ইমপ্যাক্ট হাসপাতালে।
হাসপাতাল কর্তৃকপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত ৯ মার্চ ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের দ্রুত ম্যানেজ করে ও ভুক্তভোগীরা যাতে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে সেই ব্যাপারে রোগীদের সার্বিক সহযোগিতার কথা ও উন্নত চিকিৎসার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দিতে থাকে।
Advertisement
চিকিৎসা দিয়েও যখন চোখের পচনরোধ করা সম্ভব হয়নি তখন রোগীদের ম্যানেজ করে গত ২০ মার্চ তাদের চোখ তুলে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় ২৯ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টিম গঠন করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় এক রিট আবেদনের পরেপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
সালাউদ্দিন কাজল/এমবিআর/এমএস