চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চাইলে লন্ডনকেই বেছে নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে সৌদি আরবেও যেতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে।
Advertisement
দলীয় সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া লন্ডন, সৌদি আরব এবং সিঙ্গাপুরে সাধারণত চিকিৎসা করতেন তিনি।
সর্বশেষ গত ১৫ জুলাই লন্ডন সফর করেন খালেদা জিয়া। সে সময় তার পায়ের ও চোখের চিকিৎসার কথা জানিয়েছিল বিএনপি। আর এর আগেও তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশন করিয়েছিলেন।
অপর এক সূত্রের দাবি, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য সৌদি আরবের প্রস্তাব রয়েছে। সরকারও এ বিষয়ে উদার। সৌদি আরবে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, তিউনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন আলীসহ অনেকে অবস্থান করছেন।
Advertisement
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন জাগো নিউজকে বলেন, সরকার যে গোলটা করতে চাচ্ছে সেই গোলটির জন্য বল ডি বক্সে ঠেলে দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এখন সরকারের স্ট্রাইকাররা টোকা মারলে বলটা গোল হয়ে যাবে।
মহিউদ্দিন খান মোহন এক সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকার গোপন করছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে হবে। যেহেতু তার সব চিকিৎসা বাইরে হয়েছে সেগুলোর ফালোআপের জন্য তাকে জামিন দিয়ে চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
পরে এক প্রশ্নের জবাবে এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, কারামুক্তির পর খালেদা জিয়া নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন দেশে না-কি বিদেশে চিকিৎসা করবেন।
Advertisement
প্রায় একই সময়ে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দরকার হয়, সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। চিকিৎসকরা যদি বলেন যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে তাকে বিদেশও পাঠানো যেতে পারে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান জানিয়েছেন, কারাবিধি অনুযায়ী বিদেশ পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া ও তার স্বজনদের মতামতের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান তিনি।
এদিকে কারাগারে খালেদা জিয়ার নিয়মিত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করছেন। তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। তবে তার হাঁটুতে আগে থেকেই সমস্যা ছিলো।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কারাগারে যাওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে আপনাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেস্টা হলেও বিশ্বাস করবেন, আমি আপনাদের সঙ্গেই আছি। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে, আগামীতে অনেক ফাঁদ পাতা হবে, অনেক ষড়যন্ত্র হবে, ‘সবাই সাবধান ও সতর্ক থাকবেন। বুঝে শুনে কাজ করবেন। এ দেশ সকলের, কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়’। কেএইচ/এএইচ/এমআরএম