বসন্তের শেষ দিকে বেড়েছে গরমের তীব্রতা। আর এ গরমের সঙ্গে বাড়ছে রাজধানীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র’ বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) চলতি মাসের (মার্চ) শেষ সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই শিশু।
Advertisement
আইসিডিডিআর,বির তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪শ’ থেকে সোয়া ৪শ’ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে এ সংখ্যা সাড়ে ৫শ’ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের দুই-তৃতীয়াংশ শিশু রোগী এবং সকলেই ভাইরাল ডায়রিয়াতে আক্রান্ত।
রাজধানীতে হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এটাকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন আইসিডিডিআর’বির চিকিৎসকরা। বলেন, ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে।
তারা আরও বলেন, তীব্র গরমে ঘন ঘন পিপাসা পাওয়ায় রাস্তাঘাটে আইসক্রিম বা বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করা হয়। এসব খাদ্যে যে খাবার পানি বা বরফ ব্যবহৃত হয় তা বিশুদ্ধ না হলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া বেশি গরমে বিভিন্ন ধরনের নষ্ট খাবার খেলেও ডায়রিয়া হয়। প্রতি বছর মে মাসে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
Advertisement
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আকতার জানান, গত ৯ দিনে (২০-২৮ মার্চ) মহাখালী কলেরা হাসপাতালে মোট ৪ হাজার ৩৪৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ মার্চ ৪২৮ জন, ২১ মার্চ ৪৬২ জন, ২২ মার্চ ৪৬৬ জন, ২৩ মার্চ ৪৫৮ জন, ২৪ মার্চ ৪৬৮ জন, ২৫ মার্চ ৪৭৭ জন, ২৬ মার্চ ৫২৭, ২৭ মার্চ ৫০৬ জন এবং ২৮ মার্চ ৫৫৩ জন রোগী ভর্তি হন।
মহাখালী কলেরা হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক (ক্লিনিক্যাল সার্ভিস) ডা. প্রদীপ কুমার বর্ধন বলেন, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। তবে এটা নিয়ে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।
তিনি জানান, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬শ’ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে, যাদের দুই-তৃতীয়াংশই শিশু। মূলত বিশুদ্ধ পানির অভাব বা ভালোভাবে হাত না ধৌত করে খাবার গ্রহণই ডায়রিয়ার মূল কারণ।
ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকতে বিশুদ্ধ পানি পান ও সকলকে ভালোভাবে হাত পরিস্কার করে খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্যালাইন খাওয়ান। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান।
Advertisement
এমইউ/আরএস/পিআর