ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-২ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য দুটি জন্মসনদ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার এবং বর্তমান ঠিকানা ঢাকা দেখিয়ে ডিএসসিসি থেকে জন্মসনদ তুলেছেন দুই রোহিঙ্গা।
Advertisement
এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার জেনারেল (যুগ্ম-সচিব) মো. মাহবুব-উল আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপ-রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি চিঠি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমাদের দিক থেকেও সেই তদন্ত কমিটিতে একজন প্রোগ্রামারকে সদস্য রাখা হয়েছে। যেহেতু এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয় সেহেতু তদন্তের গভীর পর্যন্ত যেতে কিছু সময় লাগবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনেকে ধারণা করছেন, কোনো ব্যক্তির জন্মসনদ থাকলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও যেহেতু পাসপোর্ট তৈরি করা যায় তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে মানবপাচারকারীরা। রোহিঙ্গাদের ভুয়া সনদ তৈরি করে মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জনে জড়িত থাকতে পারে ডিএসসিসির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।
Advertisement
জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই চিঠি পাঠানো হয়। এতে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে ফোনে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে ভুয়া সনদের বিষয়ে অভিযোগ করা হয়।
কক্সবাজার থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যায়, জন্ম সনদ দুটিতে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে কক্সবাজার জেলার নাম উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এই জন্ম সনদ দুটি ইস্যু করা হয়েছে ডিএসসিসির অঞ্চল-২ থেকে।
রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস থেকে জন্ম সনদ দুটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সনদ দুটির জন্ম নিবন্ধন নম্বরের শেষ ছয় অঙ্ক একই। সনদ দুটি একই বই এবং একই পাতায় লিপিবদ্ধ। কিন্তু একই পাতায় দুটি সনদের সিরিয়াল নম্বর একই রকম হওয়া সম্ভব নয়। জন্ম সনদ দুটিতে কক্সবাজার জেলার বদরখালী ইউনিয়নের এরিয়া কোড রয়েছে। অথচ জন্মসনদ দুটি ডিএসসিসির অঞ্চল-২ থেকে ইস্যু করা হয়েছে। জন্মসনদ দুজন আলাদা ব্যক্তির অথচ তাদের বর্তমান ঠিকানা একই।
রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠির বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শেখ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি। সে অনুযায়ী তদন্তের কাজ চলছে। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকেও একজন এই কমিটিতে আছেন। সব তথ্য বিবেচনা করে তদন্তের কাজ চলছে।
Advertisement
এএস/জেডএ/আরআইপি