দেশে ফিরেছেন নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের স্বজনরা। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
তিনি জানান, সোমবার দুপুর দেড়টায় স্বজনদের নিয়ে ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডু থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। ফ্লাইটটি বিকেল ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এতে হতাহত যাত্রীর ৫১ স্বজন রয়েছেন। রয়েছেন দুই আহতও। তারা হলেন- কবীর হোসেন ও আব্দুল্লাহ (মালদ্বীপ)।
গত ১২ মার্চ (সোমবার) বিমান দুর্ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার হতাহতদের স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ইউএস-বাংলার একটি প্রতিনিধিদল নেপালে যান।
ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ জানায়, নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে স্বজনরা ইউএস-বাংলার অফিসে যোগাযোগ করতে থাকেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি হতাহতদের পরিবারের মোট ৪৬ জনের একটি দলকে নেপালে পাঠানো হয়। এছাড়া গত শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে নিহত পিয়াস রায়ের বাবা, বিলকিসের স্বামী ও এক ভাই নেপাল যান।
Advertisement
নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। আজ (সোমবার) সকালে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে সেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
নিহত ২৩ বাংলাদেশি হলেন- আঁখি মনি, বেগম নুরুন্নাহার, শারমিন আক্তার, নাজিয়া আফরিন, এফএইচ প্রিয়ক, উম্মে সালমা, বিলকিস আরা, আখতারা বেগম, মো. রকিবুল হাসান, মো. হাসান ইমাম, মিনহাজ বিন নাসির, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, মো. মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহারা তানভীন শশী রেজা, অনিরুদ্ধ জামান, রফিক উজ জামান, পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ, খাজা সাইফুল্লাহ, ফয়সাল, সানজিদা ও নুরুজ্জামান।
তবে এখনও তিন বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। তারা হলেন- নজরুল ইসলাম, পিয়াস রয় ও আলিফুজ্জামান। ডিএনএ পরীক্ষার পর তাদের মরদেহ শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে নেপাল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা ছয় বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল (রোববার) বিকেলে আহত শাহীন বেপারীকে দেশে ফিরেয়ে আনা হয়। এর আগে শেহরিন আহমেদ, কামরুন্নাহার স্বর্ণা, মেহেদী হাসান, আলমুন্নাহার অ্যানি ও রাশেদ রুবায়েত দেশে ফেরেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
Advertisement
গত ১২ মার্চ (সোমবার) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।
এসআই/এএস/এমএআর/আরআইপি