ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত রাশেদ রুবায়েতকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। শনিবার কাঠমান্ডুর স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় অপর আহত ইমরানা কবির হাসির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।
Advertisement
রাশেদ রুবায়েতকে নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় আহত বাংলাদেশি ১০ যাত্রীর মধ্যে ছয়জন কাঠমান্ডু ছাড়লেন। বিমান বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, রাশেদ রুবায়েতকে বেলা সোয়া ৩টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০৭২ ফ্লাইটে করে দেশে আনা হচ্ছে। তার স্বজনরা জানিয়েছেন, দেশে আসার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হবে।
বাংলাদেশ থেকে নেপালে পাঠানো মেডিকেল দলের অন্যতম চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হোসাইন ইমাম বলেন, রাশেদ রুবায়েতকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
তিনি বলেন, আহত তিনজনের মধ্যে এখন কাঠমান্ডুতে থাকা ইমরানা কবির হাসির অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। আরেক আহত যাত্রী কবির হোসেন এখন নরডিক হাসপাতালে আছেন। তার অবস্থাও সংকটাপন্ন। কবিরের বিষয়ে তাই এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না চিকিৎসকরা।
Advertisement
গতকাল শুক্রবার দেশে ফিরে আসেন বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার আহত তিন যাত্রী মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার এ্যানি। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের বার্ন ইউনিটের কেবিনে নেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০০৭২ ফ্লাইটে ঢাকা ফেরেন আহত শেহরিন আহমেদ। তাকেও ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
দেশে ফেরা আহত চারজনের বিষয়ে ঢামেকের জেনারেল হেলথ সার্ভিসের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, চারজনের অবস্থাই এখন আশঙ্কামুক্ত। শনিবার ঢামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বার্ন ইউনিটে ভর্তি চারজনেরই বড় ধরনের কোনো শঙ্কা নেই। তবে মানসিক ট্রমা আছে। সকালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা দেখে গেছেন।
তিনি আরো বলেন, তাদের চিকিৎসায় ১৩ সদস্যের বিশেষজ্ঞের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যার প্রধান বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ টিম গঠন করা হয়েছে।
গত সোমবার (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।
আরএম/এমএআর/আরআইপি