নারী অধিকারের কথা কী বলবো দুর্ভাগ্যবশত দেশে মেয়েদের/ নারীদের একদমই হাঁটার পরিবেশ নাই, নরমাল রাস্তা-ঘাট বাদ দিলাম, ফাইভ স্টার হোটেলে পর্যন্ত হাঁটার পরিবেশ নাই। চোখে চোখ পড়লে যে চোখ নামিয়ে ফেলতে হয় বা সরিয়ে ফেলতে হয়, বেশিরভাগ মানুষ এই ভদ্রতা জানে না, বরং নির্লজ্জের মতো বার বার আরও বেশি করে তাকিয়ে থাকে।
Advertisement
সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হলো যখন দেখি মহিলারাই বাচ্চাদের স্কুল/কোচিংয়ে দিতে এসে সঙ্গবদ্ধ হয়ে হাঁটার রাস্তা ব্লক করে অন্য মেয়েদের পোশাক-আশাক, চাল-চলনে ভুল আর বাজে মন্তব্য করার জন্য উদগ্রীব, উনাদের কথা হচ্ছে 'ওরা পরলে, আমরা কমু না কেন?'।
অর্থাৎ, প্রতিটা মহিলা আশা করছেন যে, উনি বা উনারা যেই পোশাক পরিধান করে আছেন, সেই পোশাকই প্রতিটা মহিলার ইচ্ছা অনুযায়ী সামনের মেয়ে বা মহিলা পরবেন, এর বাইরে এলাউড না। প্রতিটা মানুষের পরিধান রুচি বা স্টাইল যে আলাদা উনারা তা জানতে, বুঝতে এবং মানতে নারাজ। আর এই ক্ষেত্রে সেইসব ছেলে/পুরুষদের কথা বাদ-ই দিলাম, যেখানে স্বজাতির অবস্থান এমন।
আমার এ স্ট্যাটাস পড়ে ওরা মিটিমিটি হাসবে, যারা না দেখার অজুহাত দিয়ে মেয়েদের শরীরে সিনা চওড়া করে ছোঁয়ার নোংরা ইচ্ছা লালন করে, যাদের শাড়ি পরা মেয়ে দেখলেও চোখ দিয়ে লালসা উপচে পড়ে, এমনকি স্কুলের ছাত্ররাও এর থেকে পিছিয়ে নেই। আমি নিজেই তার সাক্ষী।
Advertisement
অবাক লাগে... সেই সতেরো বছর আগে ইভটিজিং এর যন্ত্রণায় মা আমাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেন, আজ সতেরো বছর পরও ওই একই অবস্থা, বরং অনেক গুণ বেশি। সব কিছু এগুলেও এই দিকে পিছনের দিকে হাঁটছে ভারত- বাংলাদেশ-পাকিস্তান।
ঢাকায় যতদিন ছিলাম, গায়ে ওড়না পেঁচিয়ে বের হতে হতো, ওই চোখ গুলো থেকে বাঁচার জন্য, তারপরেও ওড়না ভেদ করেই চোখ দিতে চাইতো। তখন মনে হতো তাদের চোখ আরও তীক্ষ্ণ হয়ে গেলো বুঝি।
নাক-মুখ খিচে ইগনোর করার চেষ্টা করতাম, আর ভাবতাম এইতো আর কয়েকটা দিন, কয়েক দিন পর তো চলেই যাবো। আমার না হয় মুক্তির উপায় ছিল, কিন্তু ওরা যারা আছেন ওইখানে, তারা/উনারা??
লেখক : বৈমানিক, মডেল, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিস আয়ারল্যান্ড ও মিস আর্থ।
Advertisement
এইচআর/পিআর