রাজধানীর মহাখালীর দক্ষিণপাড়া বড় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে রোববার সকালে খুন হন ঠিকাদার নাসির কাজী (৪৮)। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বনানী থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
Advertisement
নিহত নাসির রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানের মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কার্যালয়ের পাশে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি ঠিকাদারের কাজে তিনি মহাখালীতে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইহাট উপজেলার ইদুরপুর ইউনিয়নে।
কী কারণে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পরিবারের দাবি, নিহতের গ্রামের বাড়িতে ২০০৪ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএম খালেক খুন হন। ওই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ছিলেন নাসির কাজী। ওই মামলায় নাসিরকে ১৪ মাস জেলও খাটতে হয়। জেল থেকে বের হয়ে নাসির পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।
Advertisement
ঢাকায় পরিবার নিয়ে শান্তিতেই বসবাস করছিলেন নাসির- জানান ছোট ভাই মামুন কাজী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় জেল খাটার পর আমার ভাই ঢাকায় ভালোই দিন কাটাচ্ছিলেন। সম্প্রতি চেয়ারম্যানের স্বজনরা আমার ভাইকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নেয়া হয় কিন্তু জিডি করার আগেই আমার ভাইকে মেরে ফেলা হলো।
‘হুমকির বিষয়টি ভাই তার স্ত্রীর কাছে জানিয়ে গেছেন’ বলেও দাবি করেন নাসিরের ভাইরা-ভাই জসিম। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কারা কারা আমার ভাইরা-ভাইকে হুমকি দিয়েছিল, সে তথ্য আমার শালিকার (নাসিরের স্ত্রী) কাছে আছে।’ তবে নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন আর তাদের কথা বলে কী লাভ? তারা অনেক টাকা-পয়সার মালিক। তাদের সঙ্গে আমরা পারবো না। এ হত্যার বিচার কি প্রধানমন্ত্রী করবেন? আমরা গরীব, আমাদের দিকে কি কেউ তাকাবেন?’
হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহসান হাবিব জাগো নিউজকে জানান, নাসির পেশায় ঠিকাদার ছিলেন। রোববার সকালে সে শ্রমিকদের দিয়ে দক্ষিণপাড়া বড় মসজিদে টাইলসের কাজ করাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ দুর্বৃত্তরা নাসিরকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের দেয়া খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, নাসিরের মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হবে। তবে ঠিক কী কারণে কে বা কারা নাসিরকে গুলি করে হত্যা করেছে তা তদন্তের পর বলা যাবে।
জেইউ/এমএআর/আরআইপি