বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে ২১ ফেব্রুয়ারি গুরুপ্তপূর্ণ একটি দিন। ঢাকাই চলচ্চিত্রেও দিনটি বিশেষ। এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা সোহেল রানা।
Advertisement
ষাট দশকের প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা এবং দেশীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা ঢাকা মিটফোর্ট হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৪৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। প্রতি বছর তিনি আপনজনদের নিয়ে তার নিজ বাসভবনে ঘরোয়া ভাবে জন্মদিন পালন করেন। এবারও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি।
বাংলাদেশ শিল্পী ও পরিচালক সমিতি তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে চলচ্চিত্র শিল্পী-কুশলীরা অনেকেই তার বাসভবনে যান। তাদের মধ্যে ছিলেন সোহেল রানার দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ও বন্ধু চিত্রনায়ক ফারুক। ছিলেন রোজিনা, রিয়াজ, মিশা সওদাগর, জায়েদ খান, ওমর সানীসহ আরও অনেকেই।
জন্মদিনে সোহেল রানা বলেন, ‘জীবন থেকে আরও একটি বছর চলে গেল। ৭২ বছরে পা দিলাম এবার। আগামী বছর বেঁচে থাকবো কিনা সেটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই বলতে পারবেন। সবার কাছে দোয়া চাই।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘আমার জন্মদিন নিয়ে আমার পুত্র মাশরুরের অনেক আগ্রহ। সে তার অনেক বন্ধুদের ডেকেছে। ফিল্ম থেকেও অনেক প্রিয় মানুষেরা এসেছেন আমার। সবাইকে নিয়ে একটু আনন্দে থাকা গেল। তবে নিজের জন্মদিনে ভাষা দিবসের গুরুত্ব ভুলে যাই না আমি।’
সোহেল রানার পারিবারিক নাম মাসুদ পারভেজ। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ সোহেল রানা নাম ধারণ করে। ১৯৭২ সালে মাসুদ পারভেজ নামে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম।
১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র 'মাসুদ রানা'র একটি গল্প অবলম্বনে 'মাসুদ রানা' ছবির নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই ছবির মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন। এখানে তার বিপরীতে ছিলেন মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী। এরপর অসংখ্য ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে।
দীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
Advertisement
ব্যক্তিজীবনে সোহেল রানা ১৯৯০ সালে বিয়ে করেন ডা. জিনাত পারভেজকে। তাদের সুখের দাম্পত্যে একমাত্র সন্তান মাশরুর পারভেজ জিবরান। বাবার পথ ধরে মাশরুরও চলচ্চিত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এলএ/পিআর