নির্মাণসামগ্রী ইট তৈরিতে কারচুপি চলছেই। এক মাস সময় নিয়েও প্রতারণা বন্ধ করেনি ইটভাটার মালিকরা। নির্দিষ্ট পরিমাপের চেয়ে ছোট আকারের ইট তৈরি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে ইটের প্রতারণা ঠেকাতে আবারও মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
Advertisement
সোমবার ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জাজিরায় ইটভাটায় অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এসময় পরিমাপে কারচুপির অভিযোগে পাঁচটি ইটভাটাকে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করে অধিদফতর।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের পরিচালক সৈয়দ তওহিদুল রহমান ও ঢাকা বিভাগীয় কাযার্লয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল। সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন এপিবিএন-১ এর সদস্যরা।
অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, নির্দিষ্ট পমিমাপের চেয়ে ছোট আকারের ইট তৈরি করে এক লাখের মধ্যে ২২ হাজার ইট কম দেয়া হচ্ছে। এতে করে ঠকছেন ক্রেতা আর মুনাফা লুটছেন মালিকরা।
Advertisement
সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, জানুয়ারি মাসে ইটভাটার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর। ওই সময় ইটভাটা মালিকরা সঠিক মাপের ইট তৈরির জন্য নতুন ফর্মা তৈরি করতে হবে বলে এক মাস সময় চান। পরে অধিদফতর চলতি মাসের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়। কিন্তু একমাস পার হওয়ার পরও তারা নতুন ফর্মা তৈরি করেনি। পুরনো ফর্মা দিয়ে ছোট আকারের ইট তৈরি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন। এ কারণে ভোক্তাদের স্বার্থে ইটের চুরি রোধে দেশব্যাপী অভিযানে নেমেছে অধিদফতর।
এরই অংশ হিসেবে সোমবার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জাজিরায় ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে কারচুপির অভিযোগে পাঁচটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ইট তৈরির জন্য পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সও দেখাতে পারেনি।
অধিদফতর সূত্র জানায়, ইট তৈরির জন্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) সঠিক পরিমাপ নির্ধারণ করেছে। সংস্থাটির পরিমাপ অনুযায়ী, প্রতিটির ইটের দৈর্ঘ্য ২৪ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ও উচ্চতা ৭ সেন্টিমিটার। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো ইট তৈরিতে সঠিক পরিমাপ দিচ্ছে না। ইটের সাইজ ছোট করে প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তাদের ঠকাচ্ছে।
বর্তমানে যে সাইজের ইট তৈরি হচ্ছে তা সঠিক পরিমাপের চেয়ে ২২ শতাংশ কম। অর্থাৎ এক লাখ ইটের হিসাব করলে ২২ হাজার ইট কম পাচ্ছে ক্রেতারা। এছাড়া ইটের গায়ে প্রতিষ্ঠানের নাম বা লোগো বেশি বড় করে খোদাই করায় নির্মাণের সময় বালি ও সিমেন্টের পরিমাণ বেশি লাগছে।
Advertisement
এদিকে ইটভাটা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইট উৎপাদক মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবু বক্কর বলেন, ২০০৯ সালে বিএসটিআই মান ও আকার নির্ধারণ করে দিলেও ইটভাটা মালিকরা বিষটি জানেন না। বিএসটিআইও সেভাবে প্রচার করেনি। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে সব ইটভাটা মালিককে সঠিক মাপ ও সে অনুযায়ী উৎপাদনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। তবে সঠিক মাপে ইট তৈরির জন্য এক বছর সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
এসআই/বিএ