আন্তর্জাতিক

সিঁদুর পরিয়ে বাড়িতে বিষধর গোখরা সাপের পূজা!

জ্যান্ত বিষধর সাপ। ফণা তুলছে যখন তখন। দু’সপ্তাহ ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার নিত্যানন্দপুর গ্রামে মমতা কর্মকারের বাড়িতে সেই বিষধর সাপকে পূজা করা হচ্ছে। সাপ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন বহু লোক। গ্রামবাসীদের বাধার মুখে সাপটিকে উদ্ধারে গিয়েও ফিরে আসতে হয় পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মীদের।

Advertisement

মালদহ বনবিভাগের পরিচালক কৌশিক সরকার বলেন, সাপটি উদ্ধারে গেলে বাধা দেয়া হয়। বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনে ওই পরিবারকে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হচ্ছে। তারপরেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মালদহ শহর থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পুরাতন মালদহের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুর গ্রাম। পৌষ সংক্রান্তির দিন ওই গ্রামে একটি সাপ ধরা হয়। ওই সাপটিকে গ্রামেরই একটি বাগানে রেখে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর রাতে ঘুমের মধ্যে ‘স্বপ্নাদেশ’ পান গ্রামেরই মমতা কর্মকার নামে এক নারী। তার কথা মতোই সাপটিকে বাগান থেকে নিয়ে আসা হয়। তারপর থেকেই মমতাদেবীর বাড়ির মনসা মন্দিরে সাপটিকে রেখে শুরু হয় পূজা। সাপের মাথায় দেয়া হয়েছে সিঁদুর। পরিবারের দাবি, সাপকে স্নান করানো হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়মিত দুধ ও খই খেতে দেয়া হচ্ছে।

মমতাদেবীর স্বামী চন্দ্রেশ্বর কর্মকার শ্রমিক। তাদের চার ছেলে মেয়ের মধ্যে তিন মেয়ে পড়াশোনা করে। আর ছেলে একটি পার্লারে কাজ করেন।

Advertisement

চন্দ্রেশ্বরবাবু বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে বাড়িতে মনসা পূজা করে আসছি। আমার স্ত্রীই স্বপ্নাদেশ পেয়ে সাপটিকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলেছিলেন। ওই সাপটি তাদের ‘মা’ বলে দাবি করেন তিনি।

নিত্যানন্দপুর গ্রামে একটি প্রাথমিক এবং জুনিয়র হাইস্কুল রয়েছে। এ ছাড়া ওই গ্রাম থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাহাপুর হাইস্কুল। এ ছাড়া গ্রামে শিক্ষিতের হার প্রায় ৭০ শতাংশ। তারপরেও গ্রামের মানুষেরা বিষধর সাপকে দেবতা হিসেবে পূজা করায় উদ্বিগ্ন সেখানকার সচেতন মানুষরা।

সাহাপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কিশোর বণিক বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক। গ্রামের মানুষকে আমরাও গিয়ে বোঝাবো। সাপ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এভাবে সাপটিকে যন্ত্রণা দেয়া হচ্ছে। সূত্র : আনন্দবাজার।

এআরএস/এমএস

Advertisement