আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ৮৫ বছরে পা রাখলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক ও মুক্তিযোদ্ধা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী আজ স্বাভাবিক কর্মতৎপরতার মধ্যেই তার জন্মদিন পালন করবেন। তবে জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তার দফতরের কর্মকর্তারা এবং অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কল্যাণ সমিতির নেতা ও সদস্যারা অর্থমন্ত্রীকে জন্মদিনের শভেচ্ছা জানাবেন।
Advertisement
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জন্মদিনে নিজের লেখা গবেষণাধর্মী ‘শঙ্কট এবং সুযোগ’ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন মুহিত। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বইটির প্রকাশক প্রতিষ্ঠান ‘সময় প্রকাশনী’। এ সময় প্রকাশকরা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবেন। এছাড়া রাত ৮টায় ইস্কাটন রোডের সুং গার্ডেনে তার পরিবারের সদস্যের তরফ থেকে অর্থমন্ত্রীর জন্মদিন পালন করা হবে।
১৯৩৪ সালে সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা আবু আহমদ আবদুল হাফিজের দ্বিতীয় ছেলে মুহিত। তার মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করার পর অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডে উচ্চশিক্ষা নেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেয়ার পর তখনকার পাকিস্তান এবং পরে স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
Advertisement
১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো, মুহিত তখন ওয়াশিংটন দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বে ছিলেন। জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন তিনি।
১৯৭২ সালে পরিকল্পনা সচিবের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭৭ সালে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের সচিব হন মুহিত। ১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে ‘অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে’ কাজ শুরু করেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও আইএফএডি-তে।
১৯৮২-৮৩ সালে তখনকার এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন মুহিত। দীর্ঘদিন বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করার পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি পান অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তার কাঁধেই রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোট ১১ বার ও টানা নয়বার বাংলাদেশের বাজেট ঘোষণা করার রেকর্ড রয়েছে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতের।
Advertisement
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ৩০টির অধিক বই লিখেছেন মুহিত। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুহিতকে ২০১৬ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার। জন্মদিনের শুভেচ্ছা বর্ষীয়ান এই রাজনীতিককে।
এমইউএইচ/বিএ