আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Advertisement
রোববার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ৮০ শতাংশ ভোট পাবে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের ৮০ ভাগ মানুষ বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে ঘৃণা করে। যারা ঘৃণা করে তারা তাদের ভোট দেবে?’
সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিএনপির প্রস্তাবের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে কে বেশি সরকার-বিরোধী কথা বলতে পারে। কে বেশি সরকারি-বিরোধী আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষ-প্রসূত কথা বলতে পারে, কে বেশি নেতিবাচক কথা বলতে পারে। সেটার ওপরই হাইকমান্ডের এসিআরের বিষয় আছে। এখন সেখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছে হাইকমান্ডকে খুশি করার জন্য সরকার-বিরোধী বক্তব্য দেয়া।’
Advertisement
‘এটা করতে গিয়ে কে যে কী বলে! তিনটা সরকার এ পর্যন্ত শুনলাম- একটা হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকার, একটা হচ্ছে সহায়ক সরকার, আরেকটা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এখন আবার শুনছি, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বললেন, তারা শিগগিরই সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। একই দিন মওদুদ সাহেব বললেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী সে বিষয়ে স্পষ্ট জানতে চাইবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাহলে কী দাঁড়ালো, এখানে আমি কী জবাব দেব? এখানে আমার কোনো জবাব নেই, উত্তর নেই। আগে নিজেরা ঠিক করুন- তারা নিজেরা করবেন না প্রধানমন্ত্রী সহায়ক সরকারের...। এটা তো একটা আজগুবি ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী তাদের সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী করে দেবেন। সহায়ক সরকারের দাবি হচ্ছে তাদের। রূপরেখা দেবেন তারা। এটা তো স্ব-বিরোধিতা, দ্বিচারিতা। একেকজন একেক কথা বলছেন।’
তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপি নেতা) নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে সহায়ক সরকারের রূপরেখা তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইবেন নাকি তারা নিজেরা ঠিক করবেন।’
‘প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন সরকার, সেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে। এটাই সংবিধানের বিষয়, এটাই নিয়মের বিষয়। এটাই আমাদের দেশে হয়ে আসছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে এভাবেই প্র্যাকটিস হচ্ছে।’
Advertisement
এ পর্যায়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ আছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো প্রয়োজন আমরা দেখছি না। নির্বাচন হবে, সংলাপ কেন করতে হবে- বিএনপিকে কিছু সুযোগ দেয়া ছাড় দেয়া? নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির অধিকার। এটা ছাড় দেয়া কিংবা সুযোগের বিষয় নয়।’
সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা দলগুলোকে নিয়ে গতবারের নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হয়েছিল। এবার তো বিএনপি সংসদে নেই। তারপরও বিএনপির, এ সরকারে থাকতে পারবে কিনা- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেখুন সেই ভুলটা তাদেরই। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনকালীন সরকার যেভাবে হয় সেভাবেই হবে।’
‘যখন তাদের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব ছিল তখনও কিন্তু তারা এটায় (নির্বাচনকালীন সরকার) যোগ দেয়নি। এবার তারা দাবি করে কি-না আমরা একটু দেখি। সহায়ক সরকার বলতে যে বিষয় সেখানে তাদের রূপরেখা দেবে, আমরা দেখি তারা কী করে, তাদের দাবি কী?’
বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, ‘আসলে এসব কথার মনে হয়, নির্বাচন বানচালের দুরভিসন্ধি তাদের (বিএনপি) মধ্যে কাজ করছে। তাহলে যার কোনো অস্তিত্ব নেই তা নিয়ে তারা কথা বলে কেন?’
বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ছক করছে সরকার, বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার ছক কাটার তো কোনো কারণ নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা কি আমাদের আছে? আমাদের নেই। আমাদের কাজ আছে, আমাদের উন্নয়ন আছে।’
আরএমএম/বিএ/আইআই