বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিঃসন্দেহে জাতিকে আরেক দফা সঙ্কটের দিকে নিয়ে গেল। তার (শেখ হাসিনা) বক্তব্যে দেশের জনগণ হতাশ হয়েছে। দেশে আবারও একটা রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হলো।
Advertisement
শুক্রবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই ভেবেছিল দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট এবং মানুষ যে অস্থীতিশীল অবস্থার মধ্যে পড়েছে, আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে -প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে এসব বিষয়ে সুন্দর একটি সমাপনী কথা বলবেন। কিভাবে সামনে নির্বাচনকে অর্থবহ করা যায় এবং বিরাজমান এই সঙ্কট থেকে কিভাবে উত্তোরণ ঘটানো যায় তার ব্যবস্থা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) করবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তার বক্তব্যের মধ্যে সেই সঙ্কট নিরসনের কোনো লক্ষণ খুঁজে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সত্যতার খুব একটা সম্পর্ক নেই। সবাই জানে ২০১৪ সালে যে ভোট হয়েছিল, সেই ভোটে মাত্র ৫ শতাংশ বা তারও কম মানুষ ভোট দিয়েছিল। এতেই প্রমাণ হয়, সঙ্কট নিরসনে আসলে তারা (আওয়ামী লীগ) আন্তরিক নন। এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে সেটাও সম্ভব হবে না। এটা জনগণকে আশাহত করেছে।
Advertisement
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কের অগ্রযাত্রায়। কিন্তু আমরা মনে করি, দেশ এখন দুর্নীতির মহাসড়কের অগ্রয়াত্রায়। তারা যে উন্নয়নের কথা বলছেন, এর মধ্যে দুর্নীতি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে সব দলকে পাশে চান’ - প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশে যে সঙ্কট ছিল তা রয়েই গেল। তার (শেখ হাসিনার) বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমঝোতার কোনো ইঙ্গিত আমরা দেখতে পেলাম না। বিষয়টি অনেক বড় হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এই অন্যায়গুলোকে এদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। তারা সত্যিকার অর্থে একটি অর্থবহ নির্বাচন দেখতে চায়।
‘নির্বাচনে কোনো ধরনের নৈরাজ্য বা সহিংসতা সহ্য করা হবে না’ -শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যে ফখরুল বলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই। নৈরাজ্য বিরোধী দল সৃষ্টি করে না। নৈরাজ্য তারাই সৃষ্টি করে যাতে নির্বাচন ব্যহত হয়। গোটা জাতি যেখানে অপেক্ষা করছে দেশে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হোক। তার এ বক্তব্য আরও ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী যে নির্বাচনের কথা বলেছেন সে সংবিধান কারা তৈরি করেছে। এই সংবিধান কাদের সংবিধান, কাদেরকে নিয়ে এই সংবিধান তৈরি করা হয়েছে। এখানে জনগণের আশা আকাঙ্খার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। যে ব্যবস্থাকে জনগণ মেনে নিয়েছিল, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, তা এক তরফাভাবে বাতিল করে একটা সঙ্কট তৈরি করেছে তারা। যেটা জাতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্য কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, এ বক্তব্য জাতি হতাশ হয়েছে। এ সমস্যার সমাধান হবে না। তার বক্তব্য নিঃসন্দেহে জাতিকে আরেক দফা সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে।
এমএম/আরএস