মঞ্চ দিয়ে শুরু করেছিলেন, বৈচিত্রময় সাবলীল অভিনয় দিয়ে মাতিয়ে গেছেন নাটক ও চলচ্চিত্রের আঙিনা। তবে একটা সময় তিনি চলচ্চিত্রেই বেশি নিয়মিত ছিলেন। এখানেই তিনি পেয়েছেন অভিনয়ের খ্যাতি ও তৃপ্তি। তাই তাকে চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবেই চেনেন ও জানেন সবাই।
Advertisement
বলছি সদ্য প্রয়াত অভিনেতা সিরাজ হায়দারের কথা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে তিনি আর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুকালে স্ত্রী অভিনেত্রী মিনা হায়দার, দুই ছেলে, এক মেয়ে ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী ও আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন প্রয়াত সিরাজ।
প্রয়াত এই অভিনেতার মরদেহ শেষবারের মতো নিয়ে আসা হয়েছিলো তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। এখানে চলচ্চিত্রের মানুষজন তাকে অশ্রুসিক্ত ফুলেল শুভেচ্ছায় শেষ বিদায় জানালেন। এখানে ১টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় সিরাজ হায়দারের জানাজা। উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, আলমগীর, উজ্জ্বল, ওমর সানী, জায়েদ খান, চলচ্চিত্র নির্মাতা বদিউল আলম খোকন, শাহীন সুমনসহ আরও অনেকেই।
জানাজা শেষে সিরাজ হায়দারের পরিবারের পক্ষ থেকে তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে।
Advertisement
এই অভিনেতার বড় পুত্র লেলিন হায়দার জানান, তার বাবার মরদেহ এফডিসি থেকে নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিমে। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন সিরাজ হায়দার।
অভিনয়ের সঙ্গে পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে জড়িয়ে আছে সিরাজ হায়দারের নাম। ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় দিবসে ‘টিপু সুলতান’ নাটকে করিম শাহ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয় শুরু করেন নবম শ্রেণির ছাত্র সিরাজ। দীর্ঘ সময়ে তিনি অভিনয় করেছেন যাত্রা, মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে। মঞ্চ নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন মাত্র উনিশ বছর বয়সে।
মুক্তিযুদ্ধের পর চলচ্চিত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের সহকারী হিসেবে ‘জল্লাদের দরবার’ চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তার প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্রের নাম ‘সুখের সংসার’। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত এ চলচ্চিত্রে সিরাজ হায়দার খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
১৯৭৬ সালে তিনি ‘রঙ্গনা’ নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেকগুলো নাটকের নির্দেশনা দেন। সিরাজ হায়দার দু’টি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন। এদের একটি ‘আদম ব্যাপারী’ যা মুক্তি পায়নি, অন্যটির নাম ‘সুখ’।
Advertisement
এলএ/পিআর