যমুনার চরাঞ্চলে ভুট্টাচাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের কৃষকদের। অন্য বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে চাষ হয়েছে ভুট্টা। এর ফলে যমুনার বুক চিরে জেগে ওঠা চরের বাতাসে দোল খাচ্ছে ভুট্টা গাছের সবুজ পাতা। এ এক সবুজের নবদিগন্ত যার সঙ্গে মিশে আছে রোদপোড়া আর ঘাম ঝরানো কৃষকের হাসি। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
Advertisement
ভূঞাপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার যমুনা নদী বেষ্টিত চরগুলোর ১৪শ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। এতে প্রায় ১৩ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা একটু বেশি লাভের আশায় অধিকাংশ জমিতে তামাক চাষ করে আসছিলেন। সম্প্রতি ভূঞাপুর কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তামাক চাষে জমির ঊর্বরতা নষ্ট, পরিবেশ দূষণসহ এর ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে। এর পাশাপাশি উদ্বুদ্ধ করা হয় একই জমিতে ভুট্টা চাষ করে অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা। কৃষি অফিসের এমন আশ্বাসে এখন এ চরাঞ্চলের বাতাসে দুলছে সবুজ ভুট্টা। বিস্তৃর্ণ এ মাঠ জুড়ে চাষকৃত ভুট্টার পাতায় দেখা দিয়েছে কৃষক-কৃষাণির হাসি।
উপজেলার কালিপুর গ্রামের ভুট্টাচাষি আব্দুল লতিফ বলেন, এ বছর তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি এ চাষে গত বন্যা ও বন্যা পরবর্তী সময়ে ভারি বর্ষণের ফসলে যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছিলাম তা পুষিয়ে উঠতে পারব।
গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের ইউপি সদস্য ও ভুট্টাচাষি ওয়াহেদ আলী বলেন, এবছর ভুট্টার ভালো ফলনের আশা করছি। স্যাতস্যাতে আবহাওয়ার জন্য কোথাও কোথাও কাটুই পোকার আক্রমণ ছিল কিন্তু কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতো সেচ দিলে পোকা ভেসে ওঠে। পরে পাখি সেগুলো খেয়ে ফেলেছে। এর ফলে এখন আর ভুট্টা খেতে কোনো সমস্যা নেই।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান বলেন, নিয়মিত ভুট্টা চাষিদের পরামর্শ এবং সরকারি প্রনোদনা দিয়ে আসছি। যেভাবে কৃষক ভুট্টা চাষে মনোযোগী ও পরিচর্যা করছে অন্য ফসলের তুলনায় তারা দ্বিগুন লাভবান হবে বলে আশা করছি।
আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/আরআইপি