মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রায় শেষ। প্রথম দিন থেকে দর্শনার্থীদের সমাগম বেশ। কিন্তু শৈতপ্রবাহের কারণে গত দুদিন মেলায় দর্শনার্থীদের পদচারণা ছিল খুবই কম। গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় আগতদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
Advertisement
মেলায় অংশ নেয়া বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোতে লোকসমাগমের পাশাপাশি বিক্রিও ছিল বেশ। তবে মেলায় অংশ নেয়া ছোট ব্যবসায়ীদের যেন কপাল পুড়েছে। গেলো নয়দিনেও কোনো বেচাবিক্রি নেই। তারা জানান, মেলা শুরুর প্রথম দিন থেকে দর্শনার্থীরা পণ্য কেনার চেয়ে ঘুরে ঘুরে দেখে সময় পার করছেন। ঘোরার ফাঁকে কেউ কেউ পণ্য কিনছেন; তবে হাতেগোনা কয়েকজন। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা। হতাশা প্রকাশ করেন শাহরিয়া এন্টারপ্রাইজের বিক্রয়কর্মী আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, অব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে মেলার প্রথমদিকে ক্রেতা-দর্শনার্থী কম আসে। যারা আসেন তারা মূলত ঘোরাঘুরি করেন। এ কারণে বিক্রি কম। ‘আশা করছি মেলার শেষের দিকে বিক্রি জমে উঠবে। আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার ক্রেতা কম, বিক্রিও কম হচ্ছে’- দাবি করেন তিনি।
মেলায় তৈজসপত্র বিক্রি করছে ডেজিনি নামের দেশীয় প্রতিষ্ঠান। বিক্রেতা মাহফুজ জানান, ছাড়ের অভাব নেই। মাকের্টের তুলনায় মেলায় সব পণ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কম মূল্য রাখা হচ্ছে। কিন্তু কাস্টমার নাই। আমাদের বাইরে দোকান আছে। মেলা উপলক্ষে বিক্রির একটা টার্গেট থাকে কিন্তু এবার পুরোটাই ধরা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা দর্শনার্থী আসমা আক্তার বলেন, সংসারের প্রয়োজনীয় কিছু গৃহস্থালি পণ্য কেনার উদ্দেশ্যে এখানে আসা। নতুন নতুন পণ্য পাওয়া যায়। অনেক স্টলও থাকে কিন্তু স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে বুঝলাম, সচরাচর যে দামে পণ্য বিক্রি হয় সেই দামই রাখা হচ্ছে। যেগুলোতে ছাড় দিছে সেটিও খুব বেশি নয়।
Advertisement
তিনি বলেন, কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য কিনেছি। ঘুরে দেখছি পছন্দ হলে আরো কিনবো। মেলায় দেশীয় থ্রি-পিসের দোকান দেয়া বিল্লাল এন্টারপ্রাইজের বিক্রয়কর্মী মোক্তার হোসেন বলেন, এবার ব্যবসা খুবই খারাপ। ক্রেতা নেই বললে চলে। দু-একজন যাও আসছে, তারা পণ্য দেখে দরদাম করে চলে যাচ্ছে। মেলায় উপলক্ষে আমাদের ১০/১২ জন কর্মী কাজ করছেন। মালিকরা এসব কর্মচারীর বেতন কীভাবে দেবেন সেটা এখন চিন্তার বিষয়। মেলায় স্বাস্থ্যসম্মত সুস্বাদু বিস্কুট, কেক, চকলেটসহ বেকারির পণ্য বিক্রি করছে ‘বিস্ক ক্লাব’। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো. হালিম সরকার বলেন, মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি কম। গতবার প্রথমদিকে যে হারে বিক্রি হয়েছে এবার তার ধারেকাছে নেই। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এতো বেড়েছে যে দৈনন্দিন খরচ মেটানোর পর তেমন নগদ অর্থ থাকে না। তাই মেলায় ক্রেতা কম। তবে শেষদিকে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।
‘এবার ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। লাভ তো দূরের কথা। বিক্রি নেই বললেই চলে’- এমন দাবি করেন মিয়াকো কুকারিজের বিক্রয়কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু। বলেন, শীতে দর্শনার্থী কম। কিছু আসলেও দরদাম করে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থা চললে ব্যবসা লাটে উঠবে।
এসআই/এমএআর/জেএইচ/এমএস
Advertisement