জাতীয় অর্থনীতিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতের অবদান জোরদারে বড় ধরনের প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
Advertisement
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে দক্ষতা উন্নয়নের কৌশল নির্ধারণের লক্ষ্যে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি : গতিশীল উপাদানগুলোর একীভূতকরণ এবং আইএসআইএসসি'র ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় শিল্পসচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এ কথা জানান। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও) এবং ইনফরমাল সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিল (এনএসডিসি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
শিল্পসচিব বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতের এ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন শিল্পখাতের আওতাভুক্ত অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতের সম্ভাবনা ও সমস্যা নিরূপন করে খাতভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও শোভন কর্মপরিবেশ উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। এর ফলে শিল্পখাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং দক্ষ জনশক্তি রফতানির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ লাখ তরুণ চাকরি বাজারে প্রবেশ করছে। সরকারিখাতে এককভাবে এত লোকের কর্মসংস্থান সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণের মাধমে তাদের জন্য মানসম্মত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৬৬ ভাগ শ্রমজীবী উল্লেখ করে তিনি এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে কারিগরি প্রশিক্ষণের আওতায় এনে কর্মীদের হাতিয়ারে পরিণত করার তাগিদ দেন। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা কমপক্ষে তিনগুণ বেড়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Advertisement
কর্মশালায় ইনফরমাল সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মির্জা নূরুল গণি শোভনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পৃথকভাবে দু’টি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইএসআইএসসি’র সদস্য সচিব মো. মাহাবুবুল ইসলাম এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রোগ্রাম অফিসার তানজিল আহসান। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়নের পরিষদ (এনএসডিসি) সচিবালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খোরশেদ আলম, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, সুইস কন্ট্রাকের টিম লিডার মতিউর রহমান, ইউসেপ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহ্সিনাহ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৮৭ ভাগ অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতে কর্মরত। এ বিশাল শ্রমশক্তির জন্য প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, শোভন কর্মপরিবেশ, চাকরি স্থায়িত্ব ও আইনগত স্বীকৃতির সুযোগ খুবই সীমিত। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের অবদান সঠিকভাবে বিবেচনা করা হয় না। তাদের জন্য খাতভিত্তিক উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে, শিল্পখাতে উৎপাদনশীলতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের, ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ হাজার ১৬৩টি প্রতিষ্ঠান দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করছে উল্লেখ করে তারা এসব প্রতিষ্ঠানের গুণগত মানোন্নয়নের তাগিদ দেন।
এসআই/জেএইচ/জেআইএম
Advertisement