‘ভাইসব। ফুটবল, ফুটবল, ফুটবল। রোববার কমলাপুর স্টেডিয়ামে আকষর্ণীয় ফুটবল খেলা। সাফ বালিকা ফুটবলের ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। টিকিট লাগবে না। গ্যালারি উন্মুক্ত। খেলা দেখতে আসুন, মেয়েদের উৎসাহিত করুন’- গত দুই দিন ধরে গুলিস্তান, মতিঝিল, কমলাপুর, মুগদাপাড়া, বাসাবো ও মানিকনগরসহ রাজধানীর আরো কিছু এলাকায় এভাবেই চলছে মাইকিং।
Advertisement
বৃহস্পতিবার লিগ ম্যাচে ভারতকে হারানোর পর নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও মিডিয়ার মাধ্যমে দর্শকদের অনুরোধ করেছেন মাঠে আসতে। অনূর্ধ্ব-১৫ দলের মেয়েরাও চান, গ্যালারিতে বেশি দর্শক আসুক, তাদের উৎসাহ দিক। আগের তিন ম্যাচে স্বল্প সংখ্যক দর্শক যেভাবে ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ বলে গলা ফাটিয়েছে তাতে তারা উৎসাহিত হয়েছে।
এই যে এত কথা, তার উদ্দেশ্য রোববার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। এ অঞ্চলের ফুটবলে বাংলাদেশ-ভারতের অনেক ম্যাচ দেখেছে মানুষ; কিন্তু বালিকাদের এই টুর্নামেন্ট এটাই প্রথম। ঢাকার দর্শকদের সামনে সুযোগ দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের কিশোরীদের ফাইনালযুদ্ধ দেখার। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফাইনাল শুরু হবে বেলা ২ টায়।
মেয়েদের এ টুর্নামেন্ট ঘিরে অন্যরকম এক আবহ তৈরি হয়েছে ফুটবল অঙ্গনে। বিশেষ করে লিগ পর্যায়ের তিনটি ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা উপভোগ্য ফুটবল খেলায় আকর্ষণ বেড়েছে দর্শকদের মধ্যে। শনিবার বাফুফে ভবন সংলগ্ন টার্ফে স্বাগতিক মেয়েরা যখন অনুশীলন করছিলো তখন অনেক মানুষ পাশের ভবনগুলোতে দাঁড়িয়ে তা দেখেছে। বাউন্ডারির বাইরে রিক্সায় দাঁড়িয়ে অনেক চালক শির উঁচিয়ে মেয়েদের অনুশীলন দেখার চেষ্টা করেছেন।
Advertisement
ঘরের মাঠের এ টুর্নামেন্টের ফাইনালের আগ পর্যন্ত সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরাই। নেপালের বিপক্ষে ৬-০ এবং ভুটান ও ভারতের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে অপরাজিত হিসেবেই ফাইনাল খেলছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও ভারতের আগের তিন ম্যাচগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে স্বাগতিকদেরই রাখতে হবে ফেভারিট হিসেবে। ভারতকে হারনোর ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মনিকা চাকমাতো বলেই দিয়েছেন, ‘আমরাই ফেবারিট।’ যদিও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন মুখে ফেবারিট শব্দটি আনেননি। তবে তিনি এটা বলেছেন, ‘ভারত আমাদের চেয়ে কোনো দিকেই এগিয়ে নেই।’
শনিবার অনুশীলনে মেয়েদের শেষবারের মতো ঝালিয়ে নিলেন কোচ ছোটন। পাসিং, প্রেসিং, সেটপিস- কোনো কিছুতেই যেন ঘাটতি না থাকে তা নিয়েই কাজ করলেন ফাইনালের আগের শেষ অনুশীলনে। এক কথায় ফাইনালের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশের মেয়েরা। যাদের বিরুদ্ধে ফাইনাল সেই ভারতকে লিগ ম্যচে সহজে হারানোর পর মনিকা, আঁখি আর মারিয়াদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
মেয়েদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে ভারতকে অবশ্য প্রথম হারায়নি বাংলাদেশ। গত বছর তাজিকিস্তানে তাদের দুইবার হারিয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। একবার লিগ ম্যাচে, আরেকবার ফাইনালে। এবারও দুশানবেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনতে চায় ছোটনের শিষ্যরা। বছর শেষে দেশবাসীকে উপহার দিতে চায় একটি ট্রফি।
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement