জর্ডানে একই কারখানায় কাজ করতেন সিরাজগঞ্জের নাজমা খাতুন (৩০) ও বগুড়ার শিবগঞ্জের তাহেরুল ইসলাম (৩২)। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে নাজমাকে বিয়ে করে ১০ বছর সংসার করেন প্রবাসী স্বামী।
Advertisement
সম্প্রতি বাড়ি করার কথা বলে স্ত্রীর টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাহেরুল শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে আসেন।অনেক সন্ধান করে বাড়িতে গেলেও ওই নারীকে তাড়িয়ে দিয়েছেন তাহেরুলের আত্মীয়-স্বজনরা। বাধ্য হয়ে তিনি রোববার দুপুরে শিবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাহেরুলের বাড়িতে কাউকে পায়নি পুলিশ। অবশ্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অভিভাবকরা পুলিশের কাছে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন।
শিবগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোকাম্মেল জানান, তাদের বিয়ের কাবিননামা নেই। সমস্যা সমাধানে শুক্রবার দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে।
Advertisement
নাজমা জানান, তিনি আগে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ২০০৬ সালে জর্ডানে গিয়ে একটি বেসরকারি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। সেখানে সহকর্মী বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে তাহেরুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয়। একই কারখানায় কাজ করায় দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ২০০৭ সালে স্থানীয় মাওলানার মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়ে তারা দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। দেশে ফিরে তাহেরুল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেয়ার কথা দেন।
কিছুদিন আগে বাড়ি করার জন্য তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাহেরুল শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামে মামার বাড়ির কাছে জায়গা কেনেন। গত কয়েক বছরে তাহেরুল তার উপার্জিত প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
নাজমার ভাষ্য, গত ৭ নভেম্বর তাহেরুল দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর ২২ নভেম্বর তিনিও (নাজমা) সিরাজগঞ্জে বাপের বাড়িতে ছুটিতে আসেন। ফেরার পর থেকে তাহেরুল তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
Advertisement
গত ২৩ নভেম্বর বিকেলে ভাতিজা রাজু মিয়া ও আনিসুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের চন্দনপুর গ্রামে এলে জানতে পারেন, ওটা তাহেরুলের মামা নেহারুল ইসলামের বাড়ির ঠিকানা।
বিষয়টি মামা শ্বশুর নেহারুল ইসলামকে জানালে তিনি তাকে উল্টো হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে আটমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাফফরকে জানালে তিনি এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন।
নাজমা বলেন, তাহেরুল আমাকে দেশে ফিরে ধুমধামের সঙ্গে বিয়ে করে ঘরে তোলার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মাওলানা দিয়ে কলেমা পড়িয়ে গত ১০ বছর সংসার করেছেন। কাউকে না জানিয়ে তাহেরুলকে বিয়ে ও উপার্জনের সর্বস্ব দেয়ায় বাবা-মা তাকে আশ্রয় দিচ্ছেন না। স্বামীও তাকে ঘরে নিচ্ছেন না।
নাজমা বলেন, সংসার ফিরে না পেলে তার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। তাই তিনি প্রতিকার পেতে রোববার দুপুরে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোকাম্মেল জানান, অভিযোগ পাবার পর তাহেরুলের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার বাবা-মা নেই। তিনি মামা নেহারুলের সংসারে বড় হন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান তারা।
এএম/এমএস