চলমান প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুলের জন্য গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এই নামের কোন কর্মকর্তা সাদুল্ল্যাপুরে নেই।
Advertisement
চেষ্টা করেও অস্তিত্বহীন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে স্পষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গত ২১ নভেম্বর সিলেট বোর্ডের ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ পরীক্ষার ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্রে অর্ধ শতাধিক ভুল ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এসব ভুল ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সমালোচনায় মুখর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫’ অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে ২৩ নভেম্বর থেকে আব্দুল মান্নানকে বরখাস্ত করা হলো।
Advertisement
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, প্রাথমিক সমাপনীতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে থাকে ময়মনসিংহের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি(নেপ)। নেপ থেকে জানানো হয়েছে, ওই সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ভুলেভরা প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্বে ছিলেন। সেই অনুযায়ী বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়েছে।
গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, এখানে আব্দুল মান্নান নামে কোন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নেই।
সাদুল্ল্যাপুরের আরও কয়েকজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, এই নামে কাউকে তারা চেনেন না। সাদুল্ল্যাপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলী ছিদ্দিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই নামে আমাদের উপজেলা কিংবা জেলায় কোন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আছেন বলে আমি শুনিনি।’ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভুল প্রশ্নপত্র প্রণয়নের জন্য গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
ওখানে এই নামে কোন কর্মকর্তা আছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি সেটা জানি না। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে নেপ। আর বরখাস্ত করেছে মন্ত্রণালয়। এখানে আমাদের কিছু নেই।’
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামানকে দুটি নম্বর থেকে ২০ বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরিচয় জানিয়ে মেসেজ পাঠানো হলেও সাড়া দেননি। অনেকবার ফোন দেয়া হলেও ধরেননি নেপের মহাপরিচালক মো. শাহ আলম।
নেপের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল হাই বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ফোনে এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটা মহপরিচালক বলতে পারবেন। মন্ত্রী (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান) আমাদের এখানে এসেছেন। মহাপরিচালক তাকে নিয়ে ব্যস্ত আছেন।’
আরএমএম/ওআর/জেআইএম