প্রাণের উৎসবে মেতেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি নগরী। শনিবার অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিরে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পদচারণায় সিডনির ব্যাংকসটাউনের পল কেটিং পার্ক এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।
Advertisement
বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার যে প্রয়াস, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে তা পরিপূর্ণতা পায়। এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। প্রবাসীদের আড্ডায় মুহূর্তেই সবাই হারিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের স্মৃতি, কৈশোর ও যৌবনের সেই ভালো লাগার দিনগুলোতে।
অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী, এমপি, মেয়র থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্যক্তিরাও উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে করেছেন আলোয় আলোকিত। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেনি। তবে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন।
এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাশেদ শ্রাবণ বলেন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দর্শকদের এনটিভির প্রতি গভীর ভালোবাসাই এ উৎসবকে সার্থক করেছে। দর্শকদের অনুপ্রেরণা পেলে প্রতি বছর এ আয়োজন করা হবে বলেও তিনি জানান।
Advertisement
কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর হাবিব, এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার পাবলিক রিলেশন্স অফিসার সাইমুম সারোয়ার, আমরা বাংলাদেশির সংগঠক ও চার্লস স্টার্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শিবলী আবদুল্লাহ, হেড অব এনটিভি অনলাইন ফকরউদ্দীন জুয়েল। উপস্থাপনা করেন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুর রহমান ও স্থানীয় সংগীত শিল্পী তমা।
বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশের এমপি ও সহকারী যোগাযোগ মন্ত্রী মার্ক জোসেফ কোর। তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রশংসা করেন। সংগীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পী রুমেন কর্মকার, নৃত্যনাট্য ও দেশি সংগীতের সুর ও তালের ওপর নাচ পরিবেশন করে দর্শক মাতান স্থানীয় শিশু-শিল্পীরা।
সুমাইয়া, নাবিলা একক সংগীতের মধ্য দিয়ে দর্শকদের মধ্যে আনন্দের উচ্ছাস আরও বাড়িয়ে দেয়। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক তমাও গান গেয়ে মাতিয়ে তোলেন দর্শকদের। এরপর প্রবাসী বাংলাদেশি ও অস্ট্রেলীয় মডেলদের ফ্যাশন শো। অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী অর্পিতা সোমের দেশীয় গানের পরিবেশনায় দর্শকরা আনন্দে মেতে উঠেন।
Advertisement
এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার সিইও রাশেদ শ্রাবণ শুভেচ্ছা বক্তব্য পড়ে শোনান।
এরপর মঞ্চে আসেন অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দলীয় নেতার প্রতিনিধি টনি বার্কের এমপি, গ্লেন ব্রোক্স, ব্যাংকসটাইন সিটির ডেপুটি মেয়র, কাউন্সিলর শাহে জামান টিটু, কেন্টাবুরির সাবেক ডেপুটি মেয়র কার্ল সালহেসহ অনেকে। তারা তিনটি দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের এক মঞ্চে দেখে শুভেচ্ছা জানান।
এ ধরনের অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করে তারা বলেন, সত্যিই এটা একটা বড় আয়োজন। বাংলাদেশের সংস্কৃতি যে কতটা সমৃদ্ধ সেটা এ আয়োজনে বোঝা যাচ্ছে।অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বাংলাদেশের সংগীতশিল্পী সাঈদ ও ক্লোজআপ তারকা রন্টি দাশ মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন। মেলার চারপাশে চটপটি, ফুসকা, দেশীয় শাড়ি-পোশাক, গহনায় বাহারি রূপে সাজানো হয় স্টলগুলো। তবে চটপটি-ফুসকার দোকানে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি।
এমআরএম/আরআইপি