ইউরোপের ভেতর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফ্রান্স। দেশটিতে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই দেশে কোনো শিশুর নাম জিহাদ রাখা হলে তা নিয়ে বিতর্ক হবেই।
Advertisement
ফ্রান্সের টুলুজ শহরের প্রধান সরকারি কৌসুলিকে এমন একটি বিষয় নিয়ে বেশ মাথা ঘামাতে হচ্ছে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, শহরের এক দম্পতি তাদের নবজাতকের নাম জিহাদ রাখার পর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরকারি কৌসুলির তদন্ত রিপোর্টের পর, টুলুজের একজন বিচারককে এ ব্যাপারে রায় দিতে হতে পারে। জিহাদ আরবি শব্দ। যার অর্থ চেষ্টা বা সংগ্রাম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই অবশ্য এই শব্দটির সঙ্গে ধর্মযুদ্ধকে গুলিয়ে ফেলেন।
বাবা-মা বাচ্চার নাম কী রাখেন সে ব্যাপারে ফরাসী আইনে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে সেই নাম যদি বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক হয় বা পরিবারের অন্য সদস্যরা যদি মনে করেন যে ঐ নামে পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাহলে আদালত চাইলে নাক গলাতেও পারে।
Advertisement
যে শিশুটির জিহাদ নাম নিয়ে হৈচৈ হচ্ছে তার জন্ম হয়েছে অাগস্টে মাসে। কিন্তু তার আগেও ফ্রান্সে অনেক ছেলে শিশুর নাম জিহাদ রাখা হয়েছে এবং তা বদলে ফেলার জন্য কোনো চাপ দেয়া হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে কট্টর ইসলামপন্থীদের জিহাদি বলা হয় ।
২০১৫ সালের শুরু থেকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের হামলায় ফ্রান্সে ২৩০ জন নিহত হয়েছে। তখন থেকেই সেদেশে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে।
২০১৩ সালে ফ্রান্সের নিস শহরে এক নারীকে এক মাসের কারাদণ্ড এবং দুই হাজার ইউরো জরিমানা করা হয়েছিল। কারণ জিহাদ নামে তার তিন বছরের শিশুটি যে জামা পরে স্কুলে গিয়েছিল তাতে লেখা ছিলো, জিহাদ, জন্ম ১১ সেপ্টেম্বর। আমি একটি বোমা। নামের জন্য নয়, মায়ের শাস্তি হয়েছিল ঐ লেখার মাধ্যমে উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগে।
অন্যদিকে, ২০১৫ সালে ফ্রান্সে একটি মেয়ে শিশুর নাম নাটেলা রাখার পর একটি আদালত তাতে বাদ সাধে। বিচারকের যুক্তি ছিলো এই নামের কারণে এই শিশুটি পরে হেনস্থার শিকার হতে পারে। এমনকি বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন যে নাটেলার বদলে শিশুটির নাম রাখা হোক এলা। এখন টুলুজ শহরের জিহাদ নামের শিশুটির নাম নিয়ে আদালত কি বলে, অনেকেই তা দেখার অপেক্ষায় আছেন।
Advertisement
টিটিএন/আইআই