‘প্রধান বিচারপতি এর আগে বহুবার অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা গেছেন। আমার জানা মতে, তার এক মেয়ে অস্ট্রেলিয়া এবং এক মেয়ে কানাডায় থাকেন। এখন উনি বিদেশে যাবেন কি না- সেটা তো তার বিষয়।’
Advertisement
‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটিতে যাওয়া প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বর্তমানে হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবনে অবস্থান করছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এর আগের দিনও (মঙ্গলবার) প্রধান বিচারপতিকে দেখতে যান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ অসুস্থ অনুভব করায় সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি তাকে দেখতে যান। তিনি প্রধান বিচারপতির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে জানা যায়, প্রধান বিচারপতির শারীরিক অবস্থা খুব একটা খারাপ নয়। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিগগিরই তিনি দেশের বাইরে যাবেন।
প্রধান বিচারপতির দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয় নিয়ে গুঞ্জন উঠলে এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুলে আলমকে প্রশ্ন করা হয়। এর উত্তরে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
Advertisement
নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, কয়েকজন আইনজীবী আজ (বৃহস্পতিবার) আপিল বিভাগে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি (প্রধান বিচারপতি) নিজ বাসভবনে আছেন। তখন আইনজীবীরা দাবি করেন, এ বিষয়ে একটি আদেশ যেন দেয়া হয়।
‘তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। মাননীয় বিচারপতি বলেছেন, উনারা (আইনজীবীরা) এ বিষয়ে আদালতে না এসে তার খাস কামরায়ও জানাতে পারতেন।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অ্যাটর্নি অফিসের লোকজন মামলা-মোকদ্দমার বাইরে কিছুই বলেন না। বরং বার অ্যাসোসিয়েশনকে দলীয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা অহেতুক কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করছেন। ফলে জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’
‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা যেভাবে বলে দিয়েছেন (প্রধান বিচারপতি নিজ বাসভবনে আছেন), এ বিষয়ে আর কোনো বিতর্ক থাকার সুযোগ নেই’- বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
Advertisement
প্রসঙ্গত, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘ এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বিষয়টি ‘নজিরবিহীন’ উল্লেখ করে সরকারি চাপে প্রধান বিচারপতি দীর্ঘ ছুটিতে গেছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ওনারা বলে দিলেন, এটা নজিরবিহীন। মানুষ অসুস্থও হতে পারবে না? প্রধান বিচারপতি তার পত্রে লিখেছেন তিনি ক্যান্সার ও নানাবিধ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেগুলো সম্পূর্ণ সারেনি। ওনার বিশ্রামের প্রয়োজন। সেজন্য উনি এক মাসের ছুটি নিয়েছেন।
২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ছুটি সংক্রান্ত একটি চিঠি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান। সেখানে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির ছুটির সময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞাকে দায়িত্ব দেন।
এফএইচ/এমএআর/আইআই