বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা। ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচদিনের এই শারদীয় দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ দেশে প্রতিটা উৎসব-পার্বণ আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গোৎসব যেন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হতে পারে সে ব্যাপারে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। বিশেষ করে পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
Advertisement
গতকাল থেকে শুরু হয়েছে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ২৭ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা, ২৯ সেপ্টেম্বর মহানবমী এবং ৩০ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই দুর্গা পূজা।মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনির শব্দ দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনের কথা জানান দিচ্ছে। এ ছাড়া পূজার মন্ত্রোচ্চারণ, আরতি আর মাইকের আওয়াজে এখন মাতোয়ারা পূজা মণ্ডপগুলো। হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও এসব মণ্ডপে ঘুরতে আসায় উৎসব সার্বজনীন রূপ নিয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা উপলক্ষে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এবার অন্যান্যবারের তুলনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি নিরাপত্তায় কাজ করছে পূজা কমিটির নিজস্ব ভলান্টিয়াররা।’ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সব ধরনের হুমকির বিষয় বিবেচনায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সারাদেশে পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা দেবে র্যাব। র্যাব ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও রাজধানীসহ সারাদেশে ৩০ হাজার ৭৭টি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা দেবে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১ টায় রাজধানীর বনানী এলাকার পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ৩ হাজার ৭৭টি পূজা মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। পূজায় পুলিশ-র্যাব ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ১ লাখ ৬৮ হাজার আনসার সদস্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া প্রত্যেকটি মণ্ড সিসি ক্যামেরা দ্বারা বেষ্টিত।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। প্রতিটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে তাই এক মহামিলন ঘটে সবার। এবারের পূজাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলেছেন বাস্তবেও এর প্রতিফলন দেখতে চাই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে নাগরিক দায়িত্বও কিন্তু কম নয়। এ ব্যাপারে সবাই আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসবেন-এমনই দেখতে চায় দেশের মানুষজন।
Advertisement
এইচআর/এমএস