মেক্সিকোর দক্ষিণ উপকূলে বৃহস্পতিবার রাতে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৬১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া দুই শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো।
Advertisement
প্রেসিডেন্ট জানান, নিহতদের মধ্যে ৪৫ জন ওয়াক্সাকাতে, ১২ জন ছিয়াপাসে এবং চারজন টাবাসকোতে প্রাণ হারান। ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে একদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে মেক্সিকোতে। এছাড়া দেশটির পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা।
বিপুল সংখ্যক উদ্ধারকর্মী টাবাসকো, ওয়াক্সাকা এবং ছিয়াপাসে ধসে পড়া ভবনের ভিতর থেকে আটকা পড়া মানুষজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরে স্বল্প উচ্চতার সুনামি হয়েছে। গুয়েতেমালাতে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। মেক্সিকোর এই ভূমিকম্প ১৯৮৫ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী। ১৯৮৫ সালের ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিল ১০ হাজার মানুষ।
Advertisement
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে ভূমিকম্পে আতঙ্কিত লোকজন ঘুমানোর পোশাক পরেই বাড়ি থেকে রাস্তায় ছুটে আসে।
বহু মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন এবং অনেকের বাড়িঘর ধসে পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে আসা মানুষের মধ্যে অনেকেই ডায়াবেটিসের রোগী। তাৎক্ষণিকভাবে তারা খাবার ওষুধ পাচ্ছেন না।
প্রাথমিক খবরে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ দশমিক ২ বলা হলেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প মেক্সিকোতে আঘাত হানার তথ্য।
শক্তিশালী এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মেক্সিকো উপকূলের পিজিজিয়াপান শহর থেকে ৮৭ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে; ভূমির ২০ কিলোমিটার গভীরে।
Advertisement
ভূমিকম্পে মেক্সিকো সিটির বিভিন্ন এলাকার ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওয়াক্সাকাতে টাউন হল এবং বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে।
মেক্সিকোর ১১ টি রাজ্যের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মেক্সিকোর রাজধানীতে কিছু জায়গায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন ধরে যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। তবে সেসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মেক্সিকোর দক্ষিণে বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি গুয়েতেমালার পশ্চিম এলাকাগুলোতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক খবরে বলা হয়েছিল ওয়াক্সাকা রাজ্যের জাচিতান শহরের মিলনায়তন কেন্দ্র, একটি হোটেল, একটি পানশালা এবং কয়েকটি ভবন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহতের সংখ্যা এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর আসছে।
সূত্র : বিবিসি
কেএ/এমএস