জাতীয়

হাসপাতালে ৪ ঈদ কাটলো আবুল বাজনদারের

একটি কিংবা দুটি নয়, চারটি ঈদ হাসপাতালেই উদযাপন করতে হলো বিরল রোগে আক্রান্ত খুলনা পাইকগাছার বাসিন্দা আবুল বাজনদারকে। তবে হাসপাতালে ঈদ ভালোই কেটেছে ‘বৃক্ষমানব’ হিসেবে পরিচিত হওয়া আবুল বাজনদারের।

Advertisement

ঈদের দিন সকালে হাসপাতাল থেকে দেওয়া সেমাই খেয়েছেন। পরে খেয়েছেন পোলাও-মুরগি, ডিম ভুনা ও কোমল পানীয়।

এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীতে কিছু সময় ঘুরে বেড়িয়েছেন। বাইরে বসে চা-ও পান করেছেন।

ঈদুল আজহার দিন শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কেবিনে বসে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন আবুল বাজনদার।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘বাড়িতে ঈদ করতে মন চায়। কিন্তু চেয়ে লাভ কি? সুস্থতা তো আগে। আর তাই পরপর হাসপাতালেই আমার চারটি ঈদ কাটলো। সামনে হয়তো আরও ঈদ এখানেই থাকতে হবে।’

জীবনযুদ্ধের কারণে এসব আর এখন কিছুই মনে হয় না আবুল বাজনদারের। হাসপাতালে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঈদ করার অভিজ্ঞতার কথা বলেন তিনি।

বলেন, ‘কোরবানির ঈদে গরুর মাংস খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু হাসপাতালে সে সুযোগ নাই। তবে বাড়ি থেকে কোরবানির মাংস আসলেই বউ-বাচ্চা নিয়ে খাব।’

আবুল বাজানদার জানান, স্ত্রী হালিমা ও তিন বছরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তাহিরাকে নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে ঈদ উদযাপন করছেন। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী পাঞ্জাবি পাঠিয়েছেন। সেই পাঞ্জাবি পড়েছেন। এছাড়া লুঙ্গি, স্ত্রীর জন্য শাড়ি ও মেয়ের জন্য জামা উপহার পেয়েছেন তিনি।

Advertisement

আবুল বাজনদার বলেন, ‘সামন্ত লাল স্যার সবসময় খোঁজ-খবর রাখছেন। খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ-খবর রাখছেন। আমি চিরকৃতজ্ঞ। শুধু তাই নয়, সাংবাদিক ফজলুল বারীর বন্ধু কাজী বাহার ভাই এসে খোঁজ নিয়েছেন। বাইরে ঘুরছি, চা খাইছি।’

তিনি বলেন, ‘মেয়ের জন্য একটা ফ্রক কিনছি। বাহার ভাই আমারে প্যান্ট আর পাঞ্জাবি দিছে। বউরে দিসে একটা জামা।’ আবুল বাজনদার আরও জানান, প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারি ঈদে কেনাকাটা করতে টাকা পাঠিয়েছেন। সেই টাকায় নিজের জন্য পাঞ্জাবি, স্ত্রীর জন্য শাড়ি ও মেয়ের জন্য ফ্রক কিনেছেন। এক ব্যবসায়ী তার ভাই ও মেয়েকে ঈদের উপহার দিয়েছেন।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে আবুল বাজনদার ঢামেকের বার্ন ইউনিটের কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখন আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ তিনি।

তার স্ত্রী হালিমা জানান, আগে হাতগুলো অনেক ভারী থাকায় ব্যথা ও যন্ত্রণা কাতরাতেন আবুল। সবসময় অস্থির থাকতেন। এখন সহজেই হাত নাড়াচাড়া করতে পারেন। হাঁটাচলাও স্বাভাবিকভাবে করতে পারছেন।

আবুল বাজনদারের বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আবুল বাজনদার আগের চেয়ে ভাল আছেন। হাসপাতালেই ওনার ঈদ কাটলেও কাছাকাছি কোথাও গিয়ে ঘুরে আসতে বলা হয়েছে। ঘুরেছেও। তার চিকিৎসা চলছে। আমরা আশা করছি পুরো সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।’

জেইউ/এসআর/পিআর